এক-এগারোর সরকার বাংলার মাটিতে আর কায়েম হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিএনপি এক-এগারোর সরকারের মতো সরকারের ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে তিনি দলটিকে সেই স্বপ্ন না দেখতে আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (২০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘ওরা স্বপ্ন দেখে আবার এক/এগারোর সরকার কায়েম করবে। এক/এগারোর সরকার বাংলার একটি মানুষ জীবিত থাকতে আর কায়েম হতে দেওয়া হবে না। আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে মির্জা ফখরুল সাহেব তার ফল শুভ হবে না। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাঙালি জাতি শেখ হাসিনার নেৃতত্বে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবেই।’
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোন যুক্তিতে চান? আপনাদের নেতা আপনাদের মাতা বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন- নিরপেক্ষ বলতে কেউ নেই। এক পাগল আর শিশু হলো নিরপেক্ষ। তাহলে আপনারা নিরপেক্ষ সরকার চান কেন? আপনাদের ম্যাডামের ভাষায় মির্জা ফখরুল আপনারা হয়ত শিশু নয়ত পাগল। আসলে ওরা (বিএনপি) দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। ওরা বাংলাদেশের অকল্পনীয় উন্নয়নকে মেনে নিতে পারছে না।’
নানক বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমরা শত্রু-মিত্রের তালিকা করতে পারিনি বলে শত্রু সেদিন ঘাঁপটি মেরে বসেছিল। আমরা মোশতাক-জিয়াদের তালিকা করে কবর রচনা করতে পারিনি বলেই সেদিন মোশতাক-জিয়ারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। আজকের বাংলাদেশে পাকিস্তানের সেই প্রেতাত্মারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে তখন তারা আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করছে।’
আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে যুব মহিলা লীগের ওপর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদে অকথ্য অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সেকথা কি ভুলে গেছেন মির্জা ফখরুল সাহেব? মেয়েদের ব্লাউজ ছিঁড়ে দিয়েছেন, আমাদের মেয়েদের বিবস্ত্র করা হয়েছে আপনাদের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে। আর আজকে আন্দোলন করেন, সমাবেশ করেন, মহাসমাবেশ করেন তারপরও বলেন গণতন্ত্র নাই। কথা বলার অধিকার নাই। কী অধিকবার আর চান? আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে মির্জা ফখরুল সাহেব তার ফল শুভ বয়ে আনবে না আপনাদের জন্য। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ এই বাঙালি জাতি শেখ হাসিনার নেৃতত্বে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবেই। আমরা কোনো বাধা মানবো না।’
বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘জাতির পিতা বারবার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য বাঙালি জাতিকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। জাতির পিতার সেই প্রদর্শিত পথেই আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা বঙ্গবন্ধু কন্যাও বারবার বলেন। আমাদেরকেও যেকোনো দুর্নীতিবাজ হোক; সেটা বিএনপি-জামায়াতের দুর্নীতিবাজ হোক, যে পর্যায়ের দুর্নীতিবাজই হোক তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। একটি স্মার্ট বাংলাদেশ পেতে হলে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ পেতে হলে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই করতে হবে।’
নাছিম বলেন, ‘কারণ দুর্নীতিবাজদের কোনো রাজনীতি নেই। দুর্নীতিবাজদের কোনো আদর্শ নেই। তাদের কোনো পরিচয় নেই। দুর্নীতিবাজদের কোনো রূপ নেই। দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষা করতে হবে।’
যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেউজির সভাপতিত্বে আলোচনা সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি। সভায় আরও বক্তব্য নে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
দ্যা মেইল বিডি/এইচএসএস