দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

স্টাফ রি‌পোর্টার : আর‌তি বর্মন। বয়স পঞ্চাশের বেশি। চেহারায় জীবন যুদ্ধের চাপ স্পষ্ট। স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেন না। কোন জমিজমা না থাকায় দুর সম্পর্কের চাচার বাড়ির এক কোনে দুই ছেলেকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছিলেন ৩০ বছর আগে। এরমধ্যে স্বামী গত হয়েছে ১৫ বছর আগে। অভাবে অনটনেও দুই ছেলেকে পড়াশোন করাচ্ছেন। অভাবের কারণে নিজের জায়গা বা ঘর এসব করা তার হয়ে উঠেনি। স্বপ্ন ছিল নিজের বাড়ি করার। নিজের ঘরে থেকে শেষ নিশ^াস নেওয়ার প্রবল ইচ্ছে তার।

তবে আরতি বর্মনের এবার নিজের ঘর হয়েছে। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার। নিজে জায়গা কিনে ঘর করতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে পাকা ঘর পেয়েছেন আরতি।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বাহাম গ্রামে গড়ে উঠা আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন আরতি বর্মন। এখানে আরতির মতো আরও অনেকে ঘর পেয়েছেন। সবার জীবনের গল্পটা ঠিক আরতির মতই।

সোমবার উপজেলার বাহাম গুচ্ছগ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে পাওয়া ঘরের বারান্দায় বসে মটির চুলোয় রান্না করছেন আরতি বর্মন। চোখে মুখে তার আন্দনের ছাপ। প্রশ্ন করার ভাব দেখেই নিজের জীবনের ফেলে আসা কষ্টের গল্প বলা শুরু করেন তিনি। সেইসাথে স্বপ্নপূরণ আর সুখের দিনের কথাও জানালেন অকপটে। পাশের ঘরের বাসিন্দারাও আরতির কথায় সায় দিলেন।

আরতি জানালেন, উপজেলার সনুই গ্রামে ছিল স্বামীর বাড়ি। অভাবে সব বিক্র করে ৩০ বছর দুই ছেলেকে নিয়ে অন্যর বাড়ির এক কোনে কাটিয়েছি। অন্যর বাড়িতে থাকার কষ্ট তারাই বুঝে যারা থাকে। যাদের নিজের বাড়ি নেই তারাই একমাত্র বুঝে নিজের বাড়ির মূল্য। কখনো ভাবিনি নিজের ঘর হবে। মৃতুর আগে নিজের ঘরে শেষ নিঃশ^াস নিতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী আমার মতো অসহায়ের বাড়ির স্বপ্ন পূরণ করেছেন। তিনি ঘর উপহার না দিলে হয়তো অন্যর বাড়িরতে থেকেই মরতে হতো। আর আমার কোন চাওয়া নেই। নিজের ঘরে মন ভরে ঘুমাতে পারছি এটাই জীবনের বড় পাওয়া। আজ সবাইকে বলতে পারি আমার নিজের বাড়ি।

আরও জানা গেছে, আরতি বর্মনের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ঝুটন বর্মন অনার্সে পড়ে। ছোট ছেলে লিটন বর্মন এসএসসি পাশ করেছে। এক সময় মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালালেও এখন ছেলেরা প্রাইভেট পড়িয়ে ও দোকানে কাজ করে সংসার চালায়।

আরতি বর্মনের পাশের ঘরে উঠেছেন শেফালি আক্তার। তার স্বামী আলী ওসমান পেশায় ইজিবাইক চালান। তাদের রয়েছে চার সন্তান।
শেফালি আক্তার জানান, স্বামীর বাড়ি উপজেলার চেংরাখালী গ্রামে ছিল। অভাবে সব বিক্রি করে দীর্ঘদিন অন্যর বাড়িতে থেকেছি। ইজিবাইক চালিয়ে স্বামীর যা আয় তা দিয়ে চার সন্তানসহ ছয়জনের পরিবার চলে কোনরকম। জায়গা কিনে ঘর করা তো স্বপ্নে মত। প্রধানমন্ত্রী উপহারের ঘর দিয়েছেন বলে আমার সন্তানেরা মন খুলে নিজের ঘরে ঘুরতে পারছে। আল্লাহ যেন তাঁর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মঙ্গল করেন। আমাদের মতো যারা অন্যর বাড়িতে থেকেছে তারাই এর যন্তণা বুঝে। সেইসাথে নিজের একটা ঘর পাওয়ার সুখও আমাদের মত লোকজনই বুঝে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় উপজেলায় ক- শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন ২২৭টি পরিবারকে দুইশতক জমিসহ ঘর দেওয়া হচ্ছে। তিন ধাপে এ পর্যন্ত ১৬১টি পরিবরাকে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ ধাপে আগামী বুধবার আরও ৬৬টি পরিবারকে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন এর উদ্বোধন করবেন। সেইসাথে এদিন মোহনগঞ্জ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, নিজের ঘর নির্মাণের মত করে আন্তরিকতা দিয়ে এসব ঘরের নির্মাণ কাজ তদারকি করেছি। প্রধানমন্ত্রীর মহৎ উদ্যোগকে সফল করতে সবরকমের চেষ্টা করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version