ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষে সাজ্জাদুল হক (৫৫) নামে স্থানীয় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের পাঁচাশি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত সাজ্জাদুল হক ওই গ্রামের তাহির উদ্দিনের ছেলে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বিক্ষুব্দ জনতা স্থানীয় প্রতিপক্ষের লোকজনের প্রায় ২০টি ঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে।
নিহত সাজ্জাদুল হকের বড় ভাই এনামুল হক জানান, প্রায় ৩০০ একর জমিতে বোরো আবাদ করার জন্য সম্প্রতি পিডিবি কর্তৃপক্ষর বরাবর একটি ট্রান্সফরমার স্থাপনের আবেদন করেছিলেন তারা। আবেদনের প্রেক্ষিতে পিডিবি কর্তৃপক্ষ ট্রান্সফরমার স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছিল। এতে স্থানীয় একটি পক্ষ বাঁধা দেয়ায় এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল আমিন জনি মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, প্রতিপক্ষের লোকজন তা মানেনি।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন পিডিবির ঠিকাদার শ্রমিক নিয়ে খুঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করলে স্থানীয় রায়হান, শিমুল, উজ্জল, সুজন, বাবুলসহ কয়েক মিলে ঠিকাদারকে খুঁটি স্থাপনে বাঁধা দেন। এসময় সাজ্জাদুলসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালান। এতে সাজ্জাদুলসহ কয়েকজন মারাত্মক রক্তাত্ব জখম হন। এদিন বেলা ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত সাজ্জাদুল হক মারা যান। এ হামলায় আরও তিন জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
গৌরীপুর থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মজুমদার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ হত্যাকান্ডের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্দ জনতা প্রতিপক্ষের লোকজনের প্রায় ২০টি ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানান তিনি।
রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল আমিন জনি জানান, বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় স্থাপন করার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। তারপরও একটি পক্ষ এতে বাঁধা দিয়ে আসছিল। এই নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর আগে দু’পক্ষের বিরোধটি মিমাংসা করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
পিডিবর ঠিকাদার হারুন অর রশিদ জানান, দু’পক্ষের সংঘর্ষের আগেই তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী ইমতিয়াজ মামুন জানান, উল্লেখিত এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন নিয়ে আগে থেকেই স্থানীয় দু’পক্ষের মাঝে বিরোধ চলছিল। তাই, ঠিকাদার হারুন অর রশিদকে বিরোধ মিমাংসা করে খুঁটি স্থাপন করতে বলা হয়েছিল।