শেখ শাহরিয়ার হোসেন, জবি প্রতিনিধি: চলতি বছরে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন বিভাগের জেষ্ঠ শিক্ষকরা। গুচ্ছ পরীক্ষার নানা অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার্থী সঙ্কটের বিষয়গুলো আমলে নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়টির সিনিয়র শিক্ষকদের।
গুচ্ছের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিশেষ একাডেমিক সভার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে ভর্তির জন্য ৯টি মেধাতালিকা দিয়েও কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী না পাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাবর্ষ শুরু করার ক্ষেত্রে বিলম্ব ঘটেছে। এছাড়া গত বছরের মত এবছরও বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার্থী সংকটে পড়তে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়কে।
শুরুতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সুবিধা, যাতায়াত সুবিধা, থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ সার্বিক ভোগান্তি হ্রাসে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু হলেও সেই উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছেনা বরং ভর্তি প্রক্রিয়া আরো দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমবর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা, সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছে যোগ না দেওয়া সহ বেশ কিছু বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠের জেষ্ঠ শিক্ষকরা গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে না যাওয়ার কথা ভাবছেন।
গুচ্ছ নিয়ে একান্ত আলাপে জবির শিক্ষকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মান বজায় রাখার জন্য গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার বিকল্প নেই। গুচ্ছে কোনো লাভ হচ্ছে না বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্বার্থে ভর্তি পরীক্ষা থাকা উচিৎ। সরকার যদি মনে করে গুচ্ছ পদ্ধতি ভালো একটা প্রক্রিয়া তাহলে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই এটি চালু করা উচিৎ। কিন্তু ঢাবি, জাবি, চবিসহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভর্তি প্রক্রিয়ায় পরিচালিত যেটা একধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ। এতে জগন্নাথের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ বলেন, গুচ্ছ একটা দীর্ঘায়িত প্রক্রিয়া। আমরা একবছর অপেক্ষা করেছি এই দীর্ঘায়িত প্রক্রিয়া কমানো যায় কিনা কিন্তু কমানো যাচ্ছেনা। শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ছে। এ পদ্ধতিতে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরাও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. লুৎফুর রহমান বলেন, যারা গুচ্ছের বাইরে আছে তারা আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। কেউ গুচ্ছের বাইরে থাকবে কেউ ভেতরে এটা তো সমন্বিত হলো না। যে উদ্দেশ্যে নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতি চালু করা সেই উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছেনা বরং ভর্তি প্রক্রিয়া আরো দীর্ঘায়িত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ছে, তাদের জীবন থেকে প্রায় একবছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা আমরা কখনোই করতে পারিনা।