দেশে চা পাণের প্রবণতা দিন দিন বাড়লেও দেশে এ বছর কমেছে চায়ের উৎপাদন। সবশেষ মৌসুমে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি বরং গত বছরের চেয়ে উৎপাদন কম হয়েছে দেশের চা বাগানগুলোতে। এর কারণ হিসেবে, প্রতিকূল আবহাওয়া, শ্রমিক আন্দোলন ও উৎপাদন মৌসুমে লোডশেডিংকেই দায়ী করছেন, সংশ্লিষ্টরা।
গত কয়েক বছর ধরেই দেশে বাড়ছে চায়ের উৎপাদন। সবশেষ মৌসুমে পানীয় পণ্যটির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ১০ কোটি কেজি নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু, পূরণ হয়নি উৎপাদনে দুই অংকের মাইলফলক ছোঁয়ার স্বপ্ন। এজন্য প্রতিকূল আবহাওয়া, শ্রমিক আন্দোলনসহ উৎপাদন মৌসুমে লোডশেডিংকেই দায়ী করছেন বাগান সংশ্লিষ্টরা।
উৎপাদনে বিপর্যয় হলেও দেশে চায়ের বার্ষিক ভোগ বাড়ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮ কোটি ৭৩ লাখ কেজির বিপরীতে ২১-২২ অর্থবছরে ভোগ বেড়ে ৯ কোটি ৩৩ লাখ কেজি হয়েছে। তারপরও পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় ফলনে বিপর্যয়।
সিলেট অঞ্চলের বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি জিএম শিবলী এ প্রসঙ্গে বলেন, অতিবৃষ্টি ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এর আগে, প্রচণ্ড তাপমাত্রায় গাছগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার ২৭ লাখ কেজি চা কম উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন বাড়াতে বাগান মালিকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হচ্ছে, বলে জানালেন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে কিছু জায়গায় কৃত্রিমভাবে চা উৎপাদন করা শুরু হয়েছে। জাতীয় চা বোর্ড পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়াতে সক্ষম চায়ের এমন জাতের ক্লোন আবিষ্কারেও সক্ষম হয়েছে। যার প্রতিফলন আমরা ইতোমধ্যেই পাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা-বাগানের মাধ্যমে দেশে প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয়। দেশের ৭০ ভাগ চা উৎপাদন হয় মৌলভীবাজারের ৯০টি বাগানের উৎপাদনের উপর নির্ভর করে।