মোঃ বাবুল হোসেন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জামুড়া-বাসুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ কাটার অভিযোগ ওঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও তার সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের মুল ভবনের সামনে দুই দিন আগেও দাড়িয়ে ছিল দীর্ঘদিনের পুরাতন কৃষ্ণচূড়া গাছটি। হঠাৎ করে রবিবার সকালে শিক্ষার্থী ও অন্যান্য শিক্ষকরা বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শোভাবর্ধনের ওই কৃষ্ণচূড়া গাছটি দেখতে না পেয়ে শুরু করেন হৈ চৈ। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এবং স্থানীয় ওই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক মিলে ওই গাছটি কর্তন করেছে। শুধু তাই নয়,পুরাতন একটি ঘরের টিন গুলোও বিক্রি করেছেন তারা। এমন ঘটনা ঘটেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জামুড়া-বাসুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরজমিনে গিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,দীর্ঘদিনের পুরতান ওই মোটা কৃষ্ণচূড়া গাছটি ছিল ওই এলাকার শোভাবর্ধন। গত বৃহস্পতিবার দিনের বেলায়ও ওই গাছটি দাড়িয়ে ছিল। শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ ছিল বিদ্যালয়। এই সুযোগে প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা বেগম স্থানীয় প্রভাবশালী ও অত্র বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিদ্যুৎ কুমারের সাথে যোগসাজস করে কাউকে না জানিয়ে নিজের ক্ষমতায় ওই গাছটি কেটে ফেলেন। সকালে এসে তারা ওই গাছটি বিদ্যালয় মাঠে দেখতে না পেয়ে হৈ চৈ শুরুরকরে দেন।
শুধু গাছ কাটার বিষয়ই নয়, তারা দুজন মিলে গত দুই মাস আগে ওই বিদ্যালয়ের একটি ঘরের ছাউনির টিনও কাউকে না জানিয়ে বিক্রি করেছেন। এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগও করে ছিলেন। কিন্তু ওই বিষয়ে তাদের কোনো শাস্তি হয়নি। আজ তারাই আবার কাউকে না জানিয়ে সরকারী জায়গার গাছ কর্তন করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা দুলা মন্ডল,জাহাঙ্গীর আলম, সাধন চন্দ্র, তরিকুল ইসলাম সহ অনেকেই জানান, শনিবার দিনের বেলায় আমরা ওই গাছটি দাড়িয়ে থাকতে দেখেছি। আজ সকালে ছাত্র-ছাত্রীদের হৈ চৈ শুনে বিদ্যালয়ে এসে দেখি ওই গাছটি নেই। আসলে প্রধান শিক্ষিকা তার এক সহকারি শিক্ষক বিদ্যুৎ কুমারকে সাথে নিয়ে ওই গাছটি কেটে ফেলেছে। সময়ের অভাবে তারা গাছের গুল গুলো নিয়ে যেতে না পেরে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে লুকে রেখেছেন। এর আগেও তারা একটি পরিত্যাক্ত ঘরের ছাউনির টিনগুলো লুকিয়ে বিক্রি করেছেন।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাহি বলেন,ওই গাছের নীচে বসে আমরা সবাই খেলাধুলা করতাম, আজ সেই গাছটিই কেটে ফেলেছে।
অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক বিদ্যুৎ কুমার বলেন,আমাকে জড়িয়ে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা মিথ্যা। প্রধান শিক্ষক নিজের সিদ্ধান্তে ওই গাছটি কেটে ফেলেছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে নিউজটি না করলেই ভালো হয়। আমি আপনাদের নাস্তার ব্যবস্থা করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা বেগম বলেন,গাছ কাটা হয়েছে এটা সত্য, তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মৌখিক নির্দ্দেশে ওই গাছটি কাটা হয়েছে। এর বাহিরে আমি কিছুই বলতে পারবো না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন,আমি সবেমাত্র এখানে যোগদান করেছি। এখনও সব বিদ্যালয়ে যেতেই পারিনি। আর গাছ কাটার মৌখিন নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আপনার নিকট থেকেই শুনলাম। তবে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাত আরা তিথি বলেন,বিদ্যালয় মাঠের গাছ কাটার বিষয়ে কিছুই জানিনা। আর কেউ অভিযোগও করেনি। তবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।