মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি :
নেত্রকোণা মদন পৌর এলাকার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের মৃত নন্দলাল বৈশ্যের নিরুদ্দেশ ছেলে দেবাশীষ বৈশ্যের জাহাঙ্গীরপুর মৌজায় ৪.৩০ শতাংশ জমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছিলো একটি জালিয়াত চক্র। জাল-জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর সু-চতুর জালিয়াত চক্র উক্ত জমি পুনরায় গত ৯ জানুয়ারী গ্রহীতা মোঃ জাহাঙ্গীর মিয়া নিকট হতে দেবাশীষ বৈশ্যের নামে না নিয়ে, প্রবীর বৈশ্যের নামে রেজিস্ট্রি করে ফেরত নেয়। অথচ জমির প্রকৃত মালিক দেবাশীষ বৈশ্য। এ সব অপর্কমের বিরুদ্ধে গত ২২ জানুয়ারী উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সদস্যরা একটি লিখিত অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরন করে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরপুর মৌজায় নিরুদ্দেশ এর বড় ভাই প্রবীর বৈশ্য কে ভূঁয়া দাতা বানিয়ে উপজেলা নায়েকপুর ইউনিয়নের চন্দ্রতলা গ্রামের মৃত আবু সাদেকের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর মিয়াকে দলিলের গ্রহীতা সাজিয়ে জালিয়াতি করে জমি নিবন্ধন করে নেয়। জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। মদন সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীরপুর বৈশ্য পাড়ার মৃত দিপক দত্ত ছেলে দুলাল দত্তকে দেবাশীষ বৈশ্য সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করেন নেন। এই দলিলে দেবাশীষ বৈশ্যের জাতীয় পরিচয় পত্রের সঙ্গে দুলালের ছবি ব্যবহার করা হয়। দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি, দুলাল দত্তকে দেবাশীষ বৈশ্য বলে সনাক্ত করে জাল দলিল রেজিস্ট্রি করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ২২ জানুয়ারী প্রবীর বৈশ্য জমিটি তার ভাই দেবাশীষ বৈশ্যের নামে তৃতীয় দফায় রেজিস্ট্রি করে দেয়। অথচ দেবাশীষ বৈশ্য দীর্ঘ দিন যাবৎ নিরুদ্দেশ। এরই জের ধরে দলিল লেখক আব্দুল গণিকে সাময়িক বহিষ্কার করেই দায় সারলেন সাব-রেজিস্টার। জাল দলিল রেজিস্ট্রি করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন, দলিল লেখক মাসুম ইয়ার খান ও দলিল লেখক মোঃ হাফিজুর রহমান। উপজেলা দলিল লেখক সমিতি ৩ জনকে সমিতি হতে বহিষ্কার করেছে। মদন দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আল মামুন আকন্দ রিপন জানান, সাধারন জনগন যেনো রেজিস্ট্রি অফিস ও দলিল লেখকদের প্রতি বিশ্বাস এবং আস্থা না হারায়, সেই দৃষ্টিকোণেই ৩ দলিল লেখকে জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কারনে সমিতি হতে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করার জন্য দাবি করছি। মদন সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুব রহমান জানান, ভুঁয়া মালিক বানিয়ে জাল দলিল রেজিস্ট্রি করায় আব্দুল গণিকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। মাসুম ইয়ার খান ও মোঃ হাফিজুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।