তাসলিমুল হাসান সিয়াম : জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় ও দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশেষ প্রকল্প শুরু করেছে সামাজিক সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে ফ্রেন্ডশিপ পরিচালিত বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আনা হয়েছে এ প্রকল্পের আওতায়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা। কর্মসূচীর আওতায় সূদূর ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার ১৮টি স্কুলের সাথে ‘প্রতিকূলতায় টিকে থাকার কৌশলে’ মতবিনিময় চালিয়ে যাবেন গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত ফ্রেন্ডশিপের ১৫ টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী।
অনলাইনে আয়োজিত ‘ইন্টার-স্কুল কানেকটিভিটি’ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রুনা খান। তিনি জানান, বছর বছর বন্যা, নদী ভাঙ্গন, শৈত্য প্রবাহ, খরা, কাল বৈশাখীর মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে টিকে আছে চরের শিক্ষার্থীরা। তাদের এ টিকে থাকার কৌশল আরও উন্নত করার পাশাপাশি দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিলে তা জলবায়ু পরিবর্তন এবং টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন তিনি।
সম্মানিত অতিথি’র বক্তব্যে প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলো নিয়ে আলোচনা করেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পরিচালক ড. একিউএম শফিউল আজম এবং ফ্রান্সের জাতীয় শিক্ষা ও যুব মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক নিকোলাস মারকুইস। তারা আশা করেন, এ প্রকল্পে প্রযুক্তি ব্যবহারের সাথে ভাষা ও যোগাযোগে দক্ষতা বাড়বে ছাত্র-ছাত্রীদের। পাশাপাশি নৈতিকতা, বিজ্ঞান, ভূগোল, ইংরেজি এবং অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান বাড়ানো যাবে শিক্ষার্থীদের।
অনুষ্ঠানে ‘ইন্টার-স্কুল কানেকটিভিটি’ প্রকল্প সম্পর্কে ফ্রেন্ডশিপ শিক্ষা বিভাগে প্রধান ব্রিঃ জেঃ (অবঃ) ইলিয়াস ইফতেখার রসূল জানান, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের ৫ উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে প্রকল্পটি। কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, রৌমারী, গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার অধীন যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের চরে অবস্থিত ফ্রেন্ডশিপের ১৫ বিদ্যালয়ের ৩৬০ শিক্ষার্থী এ প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার ১৮ বিদ্যালয়ের ৩৬০ শিক্ষার্থী যুক্ত রয়েছেন এর সাথে। ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চরে বসবাসকারী প্রায় ৩০ হাজার জনগোষ্টি এ প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হবেন বলে আশা করেন তিনি।
অনলাইন আলোচনায় যোগ দেন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এর পরিচালক অধ্যাপক ড. সামিয়া সেলিম, ফ্রেন্ডশিপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্লাহ, প্রকল্প বিশেষজ্ঞ সাখাওয়াত ফেরদৌস-সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের প্রত্যন্ত চরে জীবন ও সম্পদ রক্ষায় এ প্রকল্প বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন তারা।