আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী কোচের কাছে পিএসজি ফরোয়ার্ডকে কোচিং করানো সহজ কাজ।
লিওনেল মেসি ও দিয়েগো মারাদোনার মধ্যে কে সেরা, তুলনাটা চলে আসছে লম্বা সময় ধরে। আর্জেন্টিনার এই দুই কিংবদন্তির মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের প্রশ্নে লিওনেল স্কালোনির মনে অবশ্য কোনো দ্বিধা নেই। দেশটির বিশ্বকাপ জয়ী কোচের কাছে পিএসজি তারকাই সবার চেয়ে এগিয়ে।
২০২২ সালের আগে আর্জেন্টিনা সবশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৮৬ সালে, মারাদোনার হাত ধরে। এরপর ৩৬ বছরের অপেক্ষা শেষে মেসির নেতৃত্বে আবার বিশ্ব সেরার মুকুট মাথায় তোলে লাতিন আমেরিকার দেশট।
এর আগে থেকেই চলে আসছিল মেসি ও মারাদোনার মধ্যে ‘কে সেরা’ বিতর্ক। কাতার বিশ্বকাপের আগে আর্জেন্টিনায় জনপ্রিয়তার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন মারাদোনা। তবে ক্লাব ফুটবলে সম্ভাব্য সব শিরোপা জেতা মেসি বিশ্বকাপও জিতে যাওয়ায় এই পালে লাগে নতুন হাওয়া। তুলনাটাও তাই হচ্ছে জোরালভাবে।স্প্যানিশ রেডিও স্টেশন কোপ-এর সঙ্গে মঙ্গলবারের আলাপচারিতায় এই প্রসঙ্গে স্কালোনি নিঃসংকোচে জানিয়ে দেন, তার চোখে কেবল মেসিই সেরা।
“আমাকে যদি একজনকে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি লিওকে বেছে নেব। তার সঙ্গে আমার (সম্পর্কটা) বিশেষ কিছু। সে সর্বকালের সেরা, তবে মারাদোনাও দুর্দান্ত ছিলেন।”
কাতার বিশ্বকাপের আগে ২০১৪ সালের আসরেও ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। সেবার জার্মানির বিপক্ষে শেষ সময়ে গোল খেয়ে স্বপ্ন ভাঙে মেসিদের। পরের দুই বছর কোপা আমেরিকার দুই আসরেও ফাইনালে ওঠে তারা; কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবলে আরেকটি শিরোপার জন্য তাদের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হয়।
দেশের মানুষের থেকে সমালোচনাও শুনতে হয় মেসিকে। কারো কারো অভিযোগ ছিল, বার্সেলোনায় যতটা নিবেদনের সঙ্গে খেলেন জাতীয় দলে তা করেন না মেসি। ২০১৬ কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের পর অভিমানের বশে জাতীয় দলকে বিদায়ও বলে দেন তিনি। পরে অবশ্য সিদ্ধান্ত বদলে ফিরে আসেন আবার।
২০১৮ বিশ্বকাপে আরও বড় হতাশা সঙ্গী হয় আর্জেন্টিনার। ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নেয় তারা। এরপর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিরতি নিয়েছিলেন মেসি। ওই সময়ে কোচের দায়িত্ব পান স্কালোনি। তিনি শোনালেন সেই সময়ের কথা।
“আমরা প্রথম যা করেছিলাম, তা হলো মেসির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছিলাম। সে বলেছিল যে, সে সম্মানিত বোধ করছে। আমরা তাকে প্রথমেই যা বলেছিলাম, তা হলো, ‘ফিরে এসো, আমরা তোমার জন্য অপেক্ষা করব।’ আমরা ঠিক তাই করি এবং আট মাস পর দলে ফিরে সে অবিশ্বাস্য একটা গ্রুপ পায়।”
একসঙ্গে কাজ করতে করতে মেসিকে আরও ভালোভাবে জেনেছেন স্কালোনি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বললেন, দলে মেসির মতো একজন থাকলে কোচের কাজটা সহজ হয়ে যায়।
“মেসিকে কোচিং করানো কঠিন নয়। টেকনিক্যাল দিক থেকে তার ভুল ধরার কিছু নেই। তবে কখনও কখনও তাকে কোনো নির্দিষ্ট উপায়ে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ দিতে বা আক্রমণ করতে নির্দেশনা দিতে পারেন।”