আল নোমান শান্ত
দুর্গাপুর(নেত্রকোণা)প্রতিনিধি:
নেত্রকেণার দুর্গাপুরে প্রায় বিলুপ্ত খেজুর রস। খেজুর রসের আগ্রহ থাকলেও খেজুর গাছ না থাকায় ইচ্ছা থাকলেও প্রাপ্য হচ্ছে না স্বাদের খেজুর রস। দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুর গাছ। যা আছে সেগুলো থেকে রস পড়ে না। তাই আগ্রহ থাকলেও সহজে মিলছে না রস।
এক সময় মানুষের বাড়িতে,সড়কের পাশে সারি সারি খেজুর গাছ দেখা যেত। শীতের মৌসুম আসলে এ উপজেলার রস আহরণকারী বহু গাছিরা গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে রস আহরণের জন্যে অগণিত খেজুর গাছ চেছে পাইল করতেন। পাইল করার কয়েক দিন পরে পুনরায় পাইল দিয়ে গাছে হাঁড়ি পাতার ব্যবস্থা করতেন। এখন গাছ নেই বললেই চলে। যা কিছু আছে তা থেকে রস সংগ্রহ করার মতো সবল নয়। বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
এ নিয়ে উপজেলার গোপালপুর ও বিরিশিরি গ্রামের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, খেজুরে রস বিলুপ্ত বললেই চলে এখন। এক সময় গ্রামের প্রায় সব মানুষ শীতের সকালে বাজার করতে গিয়ে প্রথমেই যেখানে এক গ্লাস খেজুরের রস খেয়ে প্রাণটাকে ঠান্ডা করে বাজার শুরু করত,এখন সেই দৃশ্য দেখা যায় না বললেই চলে। এখন সরকারি/বেসরকারি উদ্যোগে দেশের গ্রাম অঞ্চলে বেশী বেশী খেজুর গাছ রোপণ করা প্রয়োজন। তাহলে হয়তো আমাদের ছেলে মেয়েদের মাঝে সেই খেজুর রসের পিঠা উৎসব ও শীতকে ঘিরে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া বাঙালীর আনন্দো-উল্লাস আবারও ফিরে আসবে।
এদিকে গাছিরা পরিবেশ দূষণকে দায়ি করে বলেন, আগে পরিবেশ ছিল ভালো,প্রতিটি ফল মূলের গাছে ছিল ফুলে ফলে ভরা। বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে ফল মূলের গাছে আগের মতো ফল ধরে না। আগে সকালে হাঁড়ি নামিয়ে রস নিয়ে যাওয়ার পরও গাছে ফোঁটায় ফোঁটায় অবিরত ঝড়তে থাকত দুপুর পর্যন্ত।
কলেজ শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, গেলো বছর অনেক খুঁজাখুঁজি করে একটি গ্রামে রস পেয়েছিলাম তবে এবছর গত কয়েকদিন ধরে অনেক খুঁজ নিয়েও সন্ধান মেলেনি খেজুর রসের।
এনিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, খেজুরের রসের সাথে বাঙ্গালী সংস্কৃতির একটি মিল রয়েছে। নানা কারনেই দিন দিন খেজুর গাছ গুলো হারিয়ে যাওয়ায় সে ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। খেজুর গাছ রোপণে সরকারি কোনো প্রকল্প নেই। তবে কোনো কৃষক যদি খেজুর গাছ রোপণের আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে কৃষি অফিস থেকে সকল ধরনের পরামর্শ দেওয়া হবে।