সোহাগ ইসলাম নীলফামারী:
বিয়ের দাবিতে কোচিং মাস্টারের বাড়িতে দুইদিন ধরে একটানা অনশন পালন করে আসছে নবম শ্রেনীর এক ছাত্রী।
নীলফামারী সদর উপজেলার বিশমুড়ি চাঁদেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র রায় পরিচালিত নিজ বাড়িতে কোচিং সেন্টারে পড়াশুনা করতো বিশমুরি হাজীপাড়া এলাকার দুলু মিয়ার নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়ে ছদ্দনাম সেফালি আক্তার(১৬)। ওই কোচিংয়ের শিক্ষক ছিলেন বড় খামাতপাড়া এলাকার মকছেদুল ইসলামের ছেলে মনিরুজ্জামান বাবু।
গত শনিবার(২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে সেফালি আক্তার বিয়ের দাবি নিয়ে কোচিং মাস্টার মনিরুজ্জামান বাবুর বাড়িতে গেলে এলাকা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটঁনাটি জানা জানি হলে কোচিং মাস্টারের বাড়িতে এলাকাবাসী ভীড় জমাতে থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত ওই শিক্ষকের স্বয়ন ঘরে অবস্থান করলেও প্রেমিক শিক্ষক বাবুর সাক্ষাত না পাওয়ায় শেষে বিয়ের দাবিতে অনশন পালন করেন ওই ছাত্রী।
রোববার সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, সেফালি আক্তার প্রেমিক শিক্ষকের চাচা জামিয়ার রহমানের বাড়ির বারান্দায়। এসময় সাংবাদিকের প্রশ্নে শেফালি বলেন,দুই বছর থেকে বাবু স্যারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক আমার। এই সম্পর্ক গড়ে ওঠার এক পর্যায়ে তিনি আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার সাথে কয়েক বার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন। বিয়ের করার কথা বাবুকে বললে তিনি অস্বীকৃতি জানান। যার ফলে আমি তার বাড়িতে আসি এবং বিয়ের দাবিতে অনশন
পালন করছি। সেফালি বলেন, আমি কাল থেকে কোন কিছু মুখে দেইনি, যতক্ষন পর্যন্ত আমার দাবি মানবেনা আমি না খেয়ে থাকবো।
কোচিং মাস্টার মনিরুজ্জামানের খোঁজ করলে তাকে পাওয়া যায়নি। জানা যায়, মনিরুজ্জামান বাবুর চাঁদের হাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে ১১ ডিসেম্বর সদ্য নিয়োগ পেয়েছে। একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী সেফালি, নতুন বছর এলে দশম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হবে সে। তাছাড়া এধরনের ছেলে একটি বালিকা স্কুলে থাকলে ছাত্রীরা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা।
সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত মনিরুজ্জামান বাবুর বিষয় জানতে চাইলে, চাঁদের হাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী মুঠোফোনে বলেন, মেয়ের বাবা মামলা করলে বা কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ করে বিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন শোনা যাচ্ছে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে ইসলামী সরিয়া মোতাবেক বিয়ে হবে।
এ ধরনের ঘটনা নেক্কারজনক বলে মুঠোফোনে জানান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, এখবর আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম, আমরা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করে আসছি, কিন্তু স্কুলেই যদি এ ধরনের কর্মকান্ড হয় তাহলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে,বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।