সরকারি কর্মচারীরা ফৌজদারি অপরাধ করলেও তাদের গ্রেফতার করতে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করেছে হাইকোর্ট।বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ফলে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে অনুমতি লাগবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে দুর্নীতি দমন কমিশন সংশোধন বিল, ২০১৩ পাশ হয়। এতে নতুন করে ৩২(ক) ধারা যুক্ত করে বলা হয়, এই আইনের অধীনে জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারা আবশ্যিকভাবে পালন করতে হবে। ফলে সরকারের অনুমোদন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জজ, ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে দুদক কোনো মামলা করতে পারবে না। এই ধারা চ্যালেঞ্জ করে ঐ বছরই হাইকোর্টে রিট করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদ। ২০১৪ সালে ঐ রিটের রায়ে হাইকোর্ট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি-সংক্রান্ত দুদক আইনের ৩২(ক) ধারা অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী বলে ঘোষণা করে।
রায়ে বলা হয়, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। সংবিধানের ২৬(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ আইন বাতিল হবে। সংবিধানের ৭(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো আইন যতখানি সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততটুকু বাতিল হবে। তাই সংশোধিত দুদক আইনের ৩২(ক) ধারায় একটি শ্রেণিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। সে কারণে ঐ ধারা আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিলযোগ্য বলে ঘোষণা করা হলো।