টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ কৃষক খঃ আহসানের বসতভিটা দখলের অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মো. মোতালেব হোসেন ওরফে সাগরের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে, ঘটনাস্থল ঘুরে ও আহসানের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার কোকাদাইর গ্রামের মৃত খন্দকার শাজাহানের ছোট ছেলে মোতালেব মেম্বারের হুমকি, ধামকি, আত্যচার ও মিথ্যে মামলায়, ঘর-বাড়ি ছাড়া আমি ও আমার পরিবার। আমার বড় ভাই খন্দকার মহিরউদ্দিন গতবছর মারা যাওয়ার পর থেকেই মেম্বার আমার বসতভিটা দখলের চেষ্টা করে আসছিল। প্রায় বছর ২০ আগে, বড় ভাই বাবার দেয়া বাড়ির কিছু অংশ বিক্রি করতে চাইলে, আমি জায়গাটুকু নিজে রাখার জন্য বড় ভাইকে টাকা পরিশোধ করি এবং ভাইয়ের নির্দেশেই সেখানে ঘর তুলে বসবাস করে আসছিলাম। কিন্তু ভাই মারা যাওয়ার পর মেম্বার বলেন, ভাই তার কাছে জায়গা বিক্রি করেছে। এ সব কথা বলে আমাদের পরিবারের ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। এসব নিয়ে গ্রামের মুরুব্বিরা ২ বার বসে মিটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু মেম্বার তা মানেনি। খন্দকার আহসান ধরা গলায় বলেন, গত প্রায় দিন দশেক আগে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে থানা পুলিশ এনে আমাদের বাড়ি ছাড়া করেছে। হুমকি দিয়ে বলে, আমাদের সবাইকে মাদক মামলা দিয়ে জেল খাটাবে। মিথ্যে মামলার ও তার গুন্ডা বাহিনীর ভয়ে আমি পরিবার নিয়ে আমি আজ ঘর ছাড়া। এই সুযোগে মোতালেব মেম্বার আমার লাগানো সকল গাছপালা কেটে, টিউবওয়েল উঠিয়ে, রান্না ঘর, টয়লেট ও বসত ঘর ভেঙ্গে নিয়ে সেখানে নতুন ঘর দিচ্ছে। একে তো ইদানিং প্যানেল চেয়ারম্যান হয়েছে তার উপর বিভিন্ন ভাবে অনেক কাঁচা টাকার মালিক হয়েছে। তার ক্ষমতা ও টাকার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলে না। মেম্বার দাবি করে, আমার বড় ভাইয়ের কাছে থেকে ১০৯ শতাংশ জায়গায় ক্রয় করেছে। দলিল দেখাতে বল্লে, সে কোন দলিল দেখাতে রাজি হয় না। যদি মেম্বার বড় ভাইয়ের জায়গায় কিনে থাকে তবে সেই জায়গায় সে দখল বুঝে নেবে। কেন সে আমার ঘরবাড়ি জবর দখল করে আমাকে পরিবার সহ ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করবে। ৮ মাসের গর্ভবতী ছেলের বৌ কে দৌড়ানি দিয়েছে। অনাগত সন্তান ও নিজের সুরক্ষায় প্রাণভয়ে গর্ভবতী ছেলে বৌ, পা পিছলে ২ বার পড়ে গিয়েছিল। তার পর থেকে পেটের বাচ্চার নড়াচড়া বন্ধ। পরে তাকে নিয়ে ডাক্তার কাছে যাই। আমার বৃদ্ধ মা কে শাসিয়ে বলে, তুই ঘরে থাকলে তোকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আগুন দেবো। আর ঘর তোলার সময় কাছে আসলে তোকে ঘরের ঘুটির সাথে পুতে ফেলবো। এ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে মৃত মহিউদ্দিনের স্ত্রী ও মেয়ে মুক্তার সাথে কথা বলেও পৌত্র সম্পত্তি বিক্রির বিষয়ে কোন কাগজপত্রাদি পাওয়া যায়নি। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সহবতপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. মোতালেব হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ১০৯ শতাংশ জায়গা আহসানের বড় ভাই খন্দকার মহিরউদ্দিন ওরফে মটুর কাছ থেকে ১ বছর আগে ক্রয় করেছি। আমার জমির খাজনা খারিজ আছে। আমি আহসানের জায়গায় কোন ঘর দরজা করছিনা। আমি সাফ কওলা দলিল মূলে জায়গার মালিক। কথার একপর্যায়ে তিনি একবার বলেন, আহসানের ভাইয়ের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছি, আবার বলেন আহসানের ভাইয়ের ওয়ারিশদের কাছ থেকে কেনা জমি। এছাড়াও সে বলেন, নিজে নালিশী জমিতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে লোকজন দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। তার ক্রয়কৃত জমির দলিল দেখার অনুরোধ করায়, এলাকার সরকার দলীয় এবং বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের সাথে তার ভলো সম্পর্কের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের গন্যমান্য লোকেদের কথা তিনি উল্লেখ করেন। পরে তিনি এলাকার বাইরে অবস্থানের অজুহাতে ১ দিনের সময় নিয়েও ২য় দিন পার হলেও উক্ত জমির কোন প্রকার কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি। এছাড়াও জমিটি কত টাকা শতাংশ দরে ক্রয় করা হয়েছে এমন প্রশ্নেরও কোন উত্তর দিতে রাজি হননি হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া এ ইউপি সদস্য। তিনি আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দিচ্ছে আহসান, আমি তখন দিল্লি ছিলাম। আসলে আমি তো ঢাকায় সেটেল্ড। মেম্বার নির্বাচন করেছি অন্য একটা কারনে।