স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হামলার শিকার দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করেছে প্রতিপক্ষ। সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার আদর্শনগর এলাকার শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদালয়ের সামনের সড়কে বিক্ষোভ ও মানববন্ধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্বতা জানিয়ে এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কয়েকশ মানুষ অংশ নেয়। হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দেওয়াকে নিকৃষ্ট কাজ উল্লেখ করে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে দাবি জানান তারা। পাশাপাশি হামলাকারী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করা হয়।
গত ১৩ আগষ্ট বহিরাগতদের হামলার শিকার হয় শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী সজিব (১৬) ও আসিফ। এ সময় হামলাকারী আবিদ হাসান মুগ্ধকে খুরসহ শিক্ষকরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। অপর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় মুগ্ধসহ আরও পাঁচ কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ মামলায় মুগ্ধকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে গত মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) অভিযুক্ত কিশোর রাকিব মিয়ার (১৫) মামা বাদী হয়ে হামলার শিকার ওই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এতে ওই দুই শিক্ষার্থীসহ আট শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রাকিবকে জখম করার অভিযোগ আনা হয়।
শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম শামীম বলেন, গত ১৩ আগষ্ট মুগ্ধসহ বেশ কয়েকজন কিশোর আমাদের স্কুলে ঢুকে সজিব ও আসিফকে কুর দিয়ে আঘাত করে জখম করে। সহকারী শিক্ষক কিশালয় সরকার, একজন শিক্ষিকাসহ আমরা তিনজন মিলে হামলাকারী মুগ্ধকে আটক করি। এ সময় অন্য হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। শিক্ষক হিসেবে নিজের দায়িত্ব থেকেই আমার শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে এগিয়ে গিয়ে হামলাকারীকে আটক করি। এখন দেখছি হামলার শিকার আমাদের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেই উল্টো মামলা করা হয়েছে। এটা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখন জেলায় এসপি স্যারের বিদায় অনুষ্ঠানে আছি। মানববন্ধ হয়েছে শুনেছি। তবে বিস্তারিত তথ্য আদর্শনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মো. ফরিদুল ইসলামের কাছ থেকে জেনে নিন।
মোহনগঞ্জ থানার আওতাধীন আদর্শনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় উভয় পক্ষই মামলা করেছেন। দুই পক্ষেই জখম আছে। দুই শিক্ষার্থী জখমের ঘটনায় প্রথম যে মামলা হয়েছে এটিতে একজনকে গ্রেপ্তার করে ইতিমধ্যে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে অপরপক্ষও একটি মামলা করেছেন। কারণ তাদেরও একজন জখম হয়েছে। দুই মামলার আসামিরা সবাই গা ঢাকা দিয়েছে। তবে তাদের ধরতে অভিযান চলমান আছে।
উল্লেখ্য- ভ্রমণের টাকা নিয়ে ঝগড়ার জেরে গত ১৩ আগষ্ট উপজেলার শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢুকে দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী সজিব ও আসিফকে খুর দিয়ে কেটে জখম করে একদল কিশোর। পরে শিক্ষরা হামলাকারী মুগ্ধ নামে এক কিশোরকে আটক করে পুলিশে দেয়। এ ঘটনায় মামলা হলে তাকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পরে ১৬ আগষ্ট হামলার শিকার ওই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে প্রতিপক্ষ।