যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। পেলোসি স্বশাসিত দ্বীপটি ছেড়ে যাওয়ার পরই এবার জোরালো সামরিক পদক্ষেপের পথে হাটছে চীন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো তাইওয়ানকে ঘিরে চীন টানা পাঁচদিনের ‘প্রয়োজনীয় ও ন্যায্য’ সামরিক মহড়া ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার এই মহড়া শুরু হতে যাচ্ছে। এই মহড়ায় তাজা গোলাবারুদ ব্যবহার হবে এবং পরীক্ষা হবে দীর্ঘপাল্লার অস্ত্রের।
এদিকে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এরই মধ্যে ২৭টি যুদ্ধবিমান স্বশাসিত দ্বীপটির আকাশ প্রতিরক্ষা সীমায় প্রবেশ করেছে এবং সতর্কাবস্থায় আছে তাইওয়ানের বাহিনী।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিনমেন দ্বীপের ওপর দিয়ে সম্ভবত একটি ড্রোন উড়ে গিয়েছিল এবং সামরিক বাহিনী সেটিকে তাড়াতে গোলা নিক্ষেপ করেছে।
তাইওয়ান এরই মধ্যে চীনের সামরিক মহড়া এড়িয়ে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে বিকল্প পথ খুজতে বলেছে এবং প্রতিবেশী জাপান ও ফিলিপাইনের সঙ্গে বিকল্প বিমান চলাচলের রুট খুঁজতে শুরু করেছে।
এদিকে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, চীন এই অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
বিষয়গুলিকে শান্ত করার প্রয়াসে, G7 দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা – কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে যে চীনের ক্রমবর্ধমান এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি তৈরি করেছে।
এর আগে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে, পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের বিভিন্ন স্থানে লক্ষ্যযুক্ত সামরিক অভিযান পরিচালনা করবে বেইজিং।
আলাদাভাবে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড বলেছে যে মঙ্গলবার রাত থেকেই তাইওয়ানের কাছে যৌথ সামরিক অভিযান ও মহড়া পরিচালনা করবে তারা।
ইস্টার্ন কমান্ড জানিয়েছে, এই সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হবে পুরো তাইওয়ানকে ঘিরে। দ্বীপটির উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বে সমুদ্রে বিমান ও যুদ্ধজাহাজ মহড়ায় অংশ নেবে। এসব মহড়ায় দূরপাল্লার লাইভ ফায়ারিং ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও থাকবে।
তবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত সামরিক অভিযানে লক্ষ্যবস্তু কী হবে এবং ইস্টার্ন কমান্ডের মহড়া থেকে এটি আলাদা হবে কি না, তার বিশদ বিবরণ দেয়নি বেইজিং।