স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নবম শ্রেণির অপহৃত ছাত্রীকে (১৬) উদ্ধার এবং অপহরণকারী মো. জুয়েল মিয়াকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে অপহৃতার জবানবন্দীর জন্য ওই ছাত্রীকে ও গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীকে আদালতে প্রেরণ করা হবে জানায় পুলিশ।
জুয়েল মিয়া উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের পাঁচকাটা গ্রামের মৃত আ. রশিদের ছেলে। তিনি উপজেলা সদরে বসবাস করেন এবং তিন সন্তানের জনকও তিনি। এরআগে গত বুধবার বিকেলে দিকে গাজীপুর জেলার সালনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা। অপহরণের পর তিনি সেখানে একটি গার্মেন্টসে চাকুরি নেন এবং আত্মগোপনে থাকেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কলমাকান্দা থানা ওসি মো. আবদুল আহাদ খান। তিনি জানান, বিভিন্ন সোর্সকে কাজে লাগিয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অপহরণ মামলার ২২ দিনের মধ্যে অপহরণকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
এ মামলায় বাদী ভিকটিমের বাবা গত মাসের ২৯ জুন রাতে থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। তাতে তিনি জুয়েল মিয়াকে প্রধান আসামি করেন। তার মৃত বাবাসহ চার ভাই কাউসার মিয়া (৪০), মোবারক (৩৫), মিনারুল (৩০) ও জামিরুল (২৫) আসামি করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসামিগণের বাবার আ. রশিদ একযুগ পূর্বেই মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তির নাম মামলায় থাকাতে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছিল কৌতুহল এবং অপহরনের জন্য এলাকাতেও সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।
মামলার এজাহারে বর্ণনা, ভিকটিম (বাদীর মেয়ে) কলমাকান্দা সদরে একটি বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গান বাজনা করেন। জুয়েল মিয়া তিন সন্তানের জনক ও গান বাজনা অনুষ্ঠানের ভিডিও ধারণ করেন। এ কারণে দুজনে পরিচিত থাকায় ভিকটিমের পরিবারে যাতায়াত ছিল। জুয়েল মিয়া প্রায় সময় কু অঙ্গভঙ্গি ও আচরন এবং মনভুলানোর কথাবার্তা বলে ভিকটিমকে উত্যক্ত করতেন। বাধা নিষেধ সত্ত্বেও কর্ণপাত না করে ভিকটিমের প্রতি অসদাচরণ ও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন প্রধান আসামি। বিয়ে না দিলে ভিকটিমকে অহরনের হুমকি দেন জুয়েল মিয়া। প্রধান আসামির ভাইদেরকে বিষয়টি অবগত করলেও তারা কোন সমাধান দেন নাই বরং বিয়ের দেয়ার জন্য তারাও চাপ দিতে থাকেন ভিকটিমের পরিবারকে।
গত ২৯ জুন সকালে ভিকটিম জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। বাড়িতে ফিরে না আসায় খোঁজাখুজি করে বাদী জানতে পারেন, উপজেলা পরিষদের মোড় হতে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে অটোরিকশায় (সিএনজি) তুলে অপহরণ করেন প্রধান আসামি জুয়েল মিয়া।