স্টাফ রিপোর্টার : সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় কলমাকান্দা থেকে রংছাতির ইউনিয়নের পাচগাঁও সড়কের একটি ব্রীজ ও কালভার্টের সংযোগ সড়কের দুপাশের মাটি সরে যাওয়ায় সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ সড়ক দিয়ে শুধু কলমাকান্দার রংছাতি ইউনিয়নের বাসিন্দা যাতায়াত করেন শুধু তাই না। পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ও তাহেরপুর উপজেলাবাসীও এ সড়ক দিয়ে কলমাকান্দা, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আসা-যাওয়া করেন। সবমিলিয়ে দৈনিক লাখো মানুষে যাতায়াত কলমাকান্দা-পাচগাঁও সড়কটি দিয়ে।
গত ১৬ জুন আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় এ সড়কের হাসা নোয়াগাঁও এলাকায় মাঝারি আকারের ব্রীজটির দুপাশের সংযোগ সড়কের ৩০ ফুটেরও বেশি মাটি সরে পড়ে ও দুপাশে ১৫ ফুটের অধিক গভীর হয়ে গর্তে সৃষ্টি হয়। এছাড়াও একই সড়কের রংছাতি মোড়ের কালভার্টর দুপাশের মাটি সরে যায়। এতে করে লাখো মানুষ চলাচলে দুর্ভোগে পড়েন। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় কলমাকান্দা, নেত্রকোনাসহ সারাদেশে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ থাকে। চিকিৎসা সেবা নিতে বিপাকে পড়েন ওইসব এলাকার গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘরে ফেরা মানুষেরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। কীভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন।
গত ১৮ জুন থেকে এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম ও সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় ব্রীজ ও কালভার্টের দুপাশের মাটি ভরাটের কাজ হাতে নেয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। ১৮ দিন তাদের শ্রম ও ঘামের পর বুধবার থেকে সড়কটি যাতায়াতের উপযোগি হয়ে ওঠে। বন্যার পানি থাকা সত্ত্বেও স্বল্প সময়ে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সার্বিক তৎপরতায় এ সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় স্থাপিত হওয়াতে খুশি ওইসব এলাকার বাসিন্দারা। অন্যদিকে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের দুর্ভোগও লাগব হবে এমনটা জানায় স্থানীরা।
রংছাতি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আনসুর রহমান পাঠান বাবুল জানান, গত ১৭ জুন ভোর থেকে আমার ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ ভেঙে যায়। বিশাল দুর্ভোগ ও কলমাকান্দাসহ জেলার সাথে সড়কে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় স্থানীয়রা ভেঙে যাওয়া ব্রীজ মেরামতে হাত দেন। সেনাবাহিনীর এ ধরনের কর্মকান্ডের ফলে আমার ইউনিয়নবাসীর কলমাকান্দা ও জেলাসহ সারা দেশের সাথে সড়কে যাতায়াত ব্যবস্থা পুনঃস্থাপিত হয়েছে। সেনাবাহিনী দ্রতিগতিতে ব্রীজ ও কালভার্ট মেরামত না করতো তাহলে ঈদের আনন্দ আমাদের মাঝে থাকতো না। গারো পাহাড়ের পাদদেশে বন্যায় রাস্তাঘাট ও যাদের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে। সেনাবাহিনী ও প্রশাসন এ ধরনের সহযোগিতামূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখবেন এমনাটা প্রত্যাশা করেন তিনি।
কলমাকান্দার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম জানান, পাহাড়ি ঢলে রংছাতি ইউনিয়নে ব্রিজটির দুপাশের সংযোগ সড়কে ৩০ ফুটের বেশি মাটি সরে পড়ে ও ১৫ ফুটের অধিক গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে বন্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপহারের ত্রাণ সামগ্রী সড়ক পথে পৌঁছাতে পারছিলাম না। হাসা নোয়াগাঁও ব্রীজটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কে। এ পথে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ও তাহেরপুর উপজেলার এবং কলমাকান্দার রংছাতি ইউনিয়নের আশের পাশের লাখ লাখ মানুষ চলাচল করে থাকেন। ব্রীজের দুপাশের রাস্তা ভেঙে যাবার কারণে স্বাস্থ্য সেবা, সরকারের ত্রাণ সহায়তাসহ কোন সেবাই পাচ্ছিল না ওইসব এলাকার বাসিন্দারা।
এলাকার মানুষের স্বেচ্ছাশ্রম ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় মেরামতের কাজটি হাতে নেওয়া হয়। অল্প সময়ের মধ্যে যৌথ উদ্যোগে সড়কে লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর চলচালের সুযোগ পাচ্ছে এবং জনদুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। তিনি সেনাবাহিনী, এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।