স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনায় বড় ভাইকে হত্যা শেষে লাশ গুম করার অপরাধে ভাবী ও ভাবীর বাবাকে আসামি করে দায়েরকৃত মামলায় ভিকটিমকে (মৃত ব্যক্তি) জীবিত উদ্ধার করেছে সিআইডি। রবিবার সকালে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার সাইয়েদ আহমেদ এতথ্য নিশ্চিত করেন।
জীবিত উদ্ধার শাহজাহান কবির নেত্রকোনা কলমাকান্দা উপজেলার বাদে আমতৈল গ্রামের মৃত ইন্নছ আলী ছেলে। তাকে জামালপুরের নুরুন্দি শৈলেরকান্দা পীরের মাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করে সিআইডি।
মামলার বাদী হলেন ভিকটিমের (শাহজাহান) ছোট ভাই আবুল খায়ের। তিনি তার ভাইকে হত্যা শেষে গুম করে অন্যত্র লুকিয়ে ফেলার অপরাধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরআগে ভাই নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডিও করেন।
আসামিরা হলেন- ভাবী (শাহজাহানের স্ত্রী) মিলি আক্তার (২২) ও তাওই (ভাবীর বাবা) ফজলু মিয়া (৫০)। আসামিদ্বয়ের বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কয়রা গ্রামে।
নেত্রকোনা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার সাইয়েদ আহমেদ জানান, মামলাটি তদন্তভার সিইডি দায়িত্ব পাবার পর বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়। গোপন তথ্যে বের হয়ে আসে শাহজাহান জামালপুরে অবস্থান করছেন। গত শুক্রবার (৮ জুন) শৈলাকান্দা পীরের মাজার এলাকা থেকে তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হই। শাহজাহান আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে তিনি পরিবারে অশান্তি ও কলহের কারণে মানসিক শান্তির জন্য পরিবারকে না জানিয়ে স্বেচ্ছায় সেখানে চলে গেছেন বলে জানায়।
এ মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবি ইসলাম খান জানান, আমার ক্লাইন্ট যাতে সম্পত্তিতে ভাগ বসাতে না পারে এজন্য ফাঁসাতে বাদীপক্ষ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নাটক সাজিয়েছেন। বাদীপক্ষের লোকজনসহ শাহজাহান নিজেও জানেন তার স্ত্রী ও শ্বশুরকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। জীবিত জেনেও তারা ক্লায়েন্টকে সামজিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। গত ৯ জুন মামলার তারিখে আমার ক্লায়েন্ট আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন। আগামি তারিখে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। সে অনুযায়ী পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া কি হবে তা নির্ধারণে কথা জানান তিনি।
আদালতের নির্দেশের চলতি বছরের এক-মার্চ রাতে হত্যা মামলাটি থানায় রেকর্ডভূক্ত করা হয়। ওইদিনই আবুল খায়ের তার ভাবী ও তাওই (ভাবীর বাবা) বিরুদ্ধে শাহজাহানকে হত্যা ও গুম করার অপরাধ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এজাহারের বর্ণনা মতে, মিলি আক্তার ও শাহজাহান নিজেরাই বিয়ে করেছেন। সে সম্পর্কে বাদীর ভাবী মিলি আক্তার। পারিবারিক কলহের জেরে বিভিন্ন বিভিন্তান বিষয়াদি নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য হতো। এসব বিষয় নিয়ে মিলি আক্তার রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যান। পনের দিন পরে গত ১৫ জানুয়ারী বিকেলে মিলি আক্তারের ফোনে পেয়ে শাহজাহান তার শ্বশুরবাড়ি যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হন।
বাদী জানতে পারেন শ্বশুরবাড়িতে যাত্রীযাপন শেষে পরেরদিন আলী ওসমানকে (বাদীর ভাই) ফোনে ভাবী জানায় তার স্বামীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এনিয়ে প্রথমে নিখোঁজের জিডি ও পরে আদালতে হত্যা মামলা করেন আবুল খায়ের।