স্টাফ রিপোর্টার : উৎসবের বয়স সবে মাত্র পাঁচ বছর। এ বয়সে অবাক চোখে মায়ের লাশ দেখছে শিশুটি। তার একমাস বয়সি আরেক ভাইও আছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে শিশুটির মা শিখা দাস (২৫) পাতলা পায়খানা জনিত কারণে মারা গেছেন। উৎসব দেখেছে এই বয়সে স্মরণকালে নেত্রকোনা কলমাকান্দা উপজেলা সদরে তার বাড়ির আশপাশের বন্যার পানি। পানিবন্দী অবস্থায় ঘর ও বারান্দা থেকে পানি নেমে যাওয়ার দৃশ্য দেখার পর এখন শিশু বয়সে দেখলো মায়ের মৃত্যু। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সন্নিকটে মনতলা এলাকায় উৎসবের ঘর থাকলেও ডায়রিয়া ও পাতলাখানা আক্রান্ত মাকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে এই বুঝটুকু জানে না শিশুটি।
পানিবন্দি অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে উৎসবের বাবার মুদির দোকান ডুবে গিয়েছিল। বন্যার পানি নামায় দোকানের মালামালের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছিল উৎসবের বাবা। পানিবন্দি থাকা অবস্থায় উৎসবের মা শিখা দাসের মাঝে মধ্যে পাতলা পায়খানা দেখা দিত। এক বছর বয়সি আরেক শিশুকে নিয়ে শিখা দাস এভাবে এক-দুইদিন পার করে দেন। গত বুধবার রাতে কয়েকবার পাতলা পায়খানা দেখা দিলে প্রবাল দাস তার স্ত্রীকে স্যালাইন কিনে খাওয়ান।
কিন্তু বন্যায় একদিকে বাড়ি ঘরের করুণ দশা অন্যদিকে মুদি দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে থাকায় এরকম পরিস্থিতিতে বাড়ির সন্নিকটে হাসপাতাল থাকা সত্তে¡ও যথাসময়ে নিয়ে আসতে হবে তাও করা হয়নি। এক প্রকার অজ্ঞতাই বলা চলে পরিবারটির। আর এই বয়সে শিশু উৎসবের কি-বা করার আছে। এক মাস বয়সি ভাই ও আর মার লাশের দিকে ফেল ফেল চোখে দেখা ছাড়া আর কি করতে পারে উৎসব।
কলমাকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আনার অনেক আগেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
এই বন্যায় উৎসবের বাড়ির-ঘুর ডুবে গিয়েছিল। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফ্লোরেও হাঁটু পর্যন্ত দুইদিন পানি ছিল। হাসপাতালের সামনের সড়কেও ছিল কোমর পানি। এখনো শিশুটির বাড়ির উঠানে বন্যার রয়ে গেছে।