তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: বন্যা মোকাবেলায় যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দেশের বৃহত্তম সামাজিক সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপে’র উদ্যোগে চলছে বন্যা মোকাবেলার প্রস্তুতি। কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ৮ উপজেলার ৪৩ চরে ‘ফ্রেন্ডশিপে’র স্কুলগুলোতে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে বন্যা মোকাবেলার কৌশল এবং দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি। ফলে বন্যাকালে স্থানীয়দের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় এ প্রস্তুতি কাজে দেবে বলে আশা করছেন চরাঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় ২০ হাজার জনগোষ্ঠী।
চলতি জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ‘ফ্রেন্ডশিপ‘ পরিচালিত বিদ্যালয়ে প্রায় ৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে বন্যা মোকাবেলার প্রস্তুতি শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। সংস্থার শিক্ষা বিভাগ মহাব্যবস্থাপক রেজা আহমেদ জানান, কুড়িগ্রাম-গাইবান্ধার চরাঞ্চলে ৪৩টি প্রাথমিক এবং ১৫টি মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বন্যা মোকাবেলায় করণীয় শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের বাবা-মা’কেও দেয়া হচ্ছে সতর্কতামূলক প্রশিক্ষণ, যাতে বন্যার সময় বই-পত্র এবং নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংরক্ষণ করা যায়। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বন্যা কবলিত বা বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে হলে লেখা-পড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাখা হয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা।
ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান বলেন, যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের চরে বসবাসকারী বিশাল জনগোষ্ঠির দুর্দিনে সব সময় পাশে থাকার চেষ্টা করছে ফ্রেন্ডশিপ। বন্যা এবং পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয় অঙ্গন পরিচ্ছন্ন ও জীবানু মুক্ত করা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ-পত্র নিশ্চিতে সচেষ্ট সংস্থাটি। এজন্য বন্যা সংশ্লিষ্ট রোগবালাই প্রতিরোধ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সমন্বিতভাবে কাজ করছে ‘ফ্রেন্ডশিপে’র স্বাস্থ্য বিভাগ। শুধু তাই নয়, বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে বিচ্ছিন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে নৌকা বা বাহন নিশ্চিতের কথাও জানান তিনি।
মৌসুমী বন্যা মোকাবেলা এবং আগাম প্রস্তুতি সম্পর্কে গাইবান্ধা সদর উপজেলা মোল্লার চর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান জানান, প্রতিবছর বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে ব্যপক ক্ষতির মুখে পড়েন চরবাসী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে চর জনগোষ্ঠিকে রক্ষায় সরকারের সাথে বেসরকারী সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন। এজন্য বন্যা মোকাবেলায় ফ্রেন্ডশিপের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান মোল্লার চর ইউপি চেয়ারম্যান। বিশেষ করে বন্যায় ফ্রেন্ডশিপের বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারে সুযোগ দেয়ার জন্য সংস্থাকে সাধুবাদ জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা যাত্রাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, এবার বেশ আগে থেকে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদীতে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চরবাসীর জীবনযাত্রায়। সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এমন সংকটে চরবাসীর পাশে দাড়াতে সরকারী-বেসরকারী সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।