তাসলিমুল হাসান সিয়াম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার খালবিল ও কৃষি জমিগুলোতে ধীরে ধীরে প্রবেশ করছে নতুন পানি। আর ওই পানিতে আয়োজন করে মাছ ধরছেন জেলেরা। বিরামহীনভাবে মাছ ধরতে বিলের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধদের সবাই মাছ ধরতে ব্যস্ত।
কেউ মাছ ধরছেন জীবিকার তাগিদে, কেউ বা শখের বশে। প্রতিদিনই তাদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। ঝাঁকি জাল আর চটকা জাল দিয়ে এসব মাছ ধরা হচ্ছে।
ট্যাংরা, চান্দা, মলা ঢেলা, পুঁটি, চিংড়ি, শিং ,পুয়া মাছই বেশি ধরা পড়ছে জালে।
অনেকে দিনের বেলায়, আবার রাতের আঁধারে সুচালো কোঁচ দিয়েও বড় মাছ শিকার করছেন। এ সময় মূলত ধরা পড়ে , রুই, শোল, গজার ইত্যাদি।
বর্ষার আগেই নতুন পানির আগমন যেন আনন্দ নিয়ে এসেছে এসব জেলের চোখমুখে।
গত কয়েকদিন গাইবান্ধার খাল বিল বেষ্টিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নিজেদের খাওয়াদাওয়ার চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বেশ ভালোভাবে চলছে জেলেদের পরিবার।
পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহর পুর ইউনিয়নের আজরার বিল এলাকায় ঝাঁকি জাল নিয়ে মাছ ধরতে এসে পেশাদার জেলে সাদা মিয়া জানান, প্রতিবছরই দুই মৌসুমে মাছ ধরতে বিলে আসেন তিনি ও তার সহযোগীরা। প্রথমে আসেন জ্যৈষ্ঠ মাসে যখন নতুন পানি আসতে থাকে। পরেরবার আসেন কার্তিক মাসে যখন পানি নামতে শুরু করে। বছরের এই দুটি সময়েই সবচেয়ে বেশি মাছ ধরা পড়ে তাদের জালে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নেছরির বিলে আসা সৌখিন মাছ শিকারি সাইদুর রহমান জানান, ‘প্রতিদিন ভালো পরিমাণেই মাছ আটকা পড়তেছে ফাঁদে। আল্লাহর রহমতে গত বছরের চাইতে এইবার বেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে । বৃষ্টি আসলে মাছ বেশি আটকা পড়ে ।
শখের বসে মাছ ধরতে আসা শিশুদের সংখ্যাও কম নয় । শুভ নামের প্রথম শ্রেনীর ছাত্র জানায়, চটকা জাল দিয়ে মাছ ধরে তারা। নতুন পানিতে মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলে বেশ খুশি সে।
তবে খালবিলের পাশাপাশি কৃষিজমি থেকেও উঠে আসছে বিভিন্ন জাতের ছোট ছোট মাছ ও সেগুলোর পোনা। কিছুদিন পরই এই পোনা মাছগুলো বড় হবে। কিন্তু এরই মধ্যে একশ্রেণির মাছ শিকারি কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে পোনা মাছ ধরছে। আবার সেগুলো প্রকাশ্যে বিক্রিও হচ্ছে গ্রামগঞ্জের বাজারগুলোতে।
গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকতা ফয়সাল আজম
জানান, বৃষ্টি হলে বিলের মাছগুলো জমিতে উঠে বদ্ধ পানিতে ডিম ছাড়ে। আর এই মুহূর্তে এইগুলো ধরে ফেলার কারণে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না।
বাজারে এখন পুকুরে চাষের মাছ পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। কিছুদিন যদি জেলেরা এই পোনাগুলো না ধরে তাহলে তাদেরই লাভ। কারেন্ট জাল, বেড়জাল এবং বিনজাল ব্যবহারকারী মৎস শিকারিদের আইনের আওতায় আনার জন্য উপজেলা কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।