দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

স্টাফ রিপোর্টার : মাসেও কোনদিন খোলা হয় না কমিউনিটি ক্লিনিক। ভেতরে ময়লা জমে পছা দুর্গন্ধ। দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীরা যে যেখানে পারেন ঘুরে বেড়ান। এলাকার লোকজন জানে না এখানে কেউ কর্মরত আছেন কিনা। তাদের মধ্যে একমাত্র নারী কর্মী ২০০৯ সালে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই শ^শুরবাড়িতে থাকেন। মাঝে মধ্যে বাবার বাড়ি বেড়াতে এলে ক্লিনিকে গিয়ে উঁকি দেন।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলায় গাগলাজুর ইউনিয়নে বরান্তর কমিউনিটি ক্লিনিকের চিত্র এটি। হাওর বেষ্টিত ওই এলাকায় এভাবেই সেবাহীন ভবনটি দাড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। অথচ কাগজে পত্রে এখানে তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বরান্তর কমিউনিটি ক্লিনিকে মোট তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী কর্মরত রয়েছেন। এরমধ্যে কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) পদে বিপ্লব কুমার উকিল, স্বাস্থ্য সহকারী পদে তুহিন চৌধুরী ও পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে রয়েছেন তন্দ্রা চৌধুরী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এরমধ্যে তুহিন চৌধুরী ও তন্দ্রা চৌধুরী তারা আপন ভাই-বোন। তারা বরান্তর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জু চৌধুরীর ছেলে-মেয়ে। আর বিপ্লব কুমার উকিলের বাড়ি মোহনগঞ্জ শহরের পাশে শিবির গ্রামে।

সিএইচসিপি মূলত ক্লিনিকটির সার্বিক দেখাশোনা করেন। স্বাস্থ্য সহকারী শিশুদের বিভিন্ন টিকা দানসহ অন্যান্য কর্যক্রম করেন। এছাড়া পরিবার কল্যাণ সহকারী গর্ভবতীদের কাউন্সিলিং, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলসহ অনান্য ওষুধ বিতরণ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা ইত্যাদি। অথচ তারা মাসে একদিন ক্লিনিকই খোলেন না। এলাকাবাসী চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন।

গত শনিবার (৪ জুন) মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মাহমুদা খাতুন বরান্তর কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে এটি বন্ধ পান। এদিন জাতীয়ভাবে দেশব্যাপী করোনার বুস্টার ডোজ প্রদান করা হয়। এসময় গত ১৮ মে থেকে এই ক্লিনিকটি খোলা হয়নি বলে তথ্য পান। এছাড়া হাজিরা শিটে দীর্ঘদিন কারো স্বাক্ষরও পাননি। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বরান্তর বাজারের ব্যবসায়ী মামুন চৌধুরী বলেন, বরান্তর গ্রামটি শহর থেকে অনেক দূরে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় এখানকার মানুষ চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে পারে না। হাওর পাড়ের মানুষের চিকিৎসার জন্য এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এই ক্লিনিকটি তো কাউকে কোনদিন খুলতেই দেখি না। সাধারণ মানুষ জানেই না এখানে ওষুধ দেওয়া বা চিকিৎসা হয়। তাই কেউ এখন আর এই ক্লিনিকে আসে না। এমনকি ক্লিনিকটির গায়ে কোন নামও লিখা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরান্তর গ্রামের কয়েকজন জানান, ১২-১৩ বছর আগে নেত্রকোনায় বিয়ে হয়েছে তন্দ্রা চৌধুরীর। তারপর থেকে স্বামীর সাথে শ্বশুর বাড়িতেই থাকেন তিনি। অথচ চাকরি করেন বরান্তরে। বছরে কোনদিন বাবার বাড়িতে বেড়াতে এলে মন চাইলে ক্লিনিকে গিয়ে উকি দেন। এলাকাবাসী চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন। এর প্রতিকার দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডার বিপ্লব কুমার উকিল নিয়মিত অফিসে না যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাকে অনেক দূর থেকে গিয়ে অফিস করতে হয়। আমাকে ডেপুটেশনে ওখানে দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল কিছু ছাড় দেওয়া হবে। তবে পরিবার কল্যাণ সহকারী তন্দ্রা চৌধুরী অফিস করেন কিনা? না করলে খাতায় তার স্বাক্ষর কে করে? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে তিনি নিরব থাকেন।

স্বাস্থ্য সহকারী তুহিন চৌধুরী বলেন, আমার কাজ বাহিরে, অফিসে না। নিয়মিত সে কাজ করে যাচ্ছি। এরমধ্যে কিছুটা অনিয়ম হয়তো মাঝে মধ্যে হয়।

পরিবার কল্যাণ সহকারী তন্দ্রা চৌধুরী বলেন, আমার বাচ্চা হওয়ার সময় ছুটিতে ছিলাম ছয় মাস। এখন ছোট বাচ্চা নিয়ে অফিস করতে কিছুটা সমস্যা হয়। তবে দায়িত্ব পালন করি। মাঝে মধ্যে হয়তো মিস হয়। তবে অফিসে দেখার দায়িত্ব সিএইচসিপির। তিনি যেহেতু গাফেলতি করেন সেক্ষেত্রে আমরাও কিছুটা করি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মাহমুদা খাতুন বলেন, গত শনিবার (৪ জুন) করোনার বুষ্টার ডোজ প্রদানের মতো একটা জাতীয় প্রোগ্রামের তারা ক্লিনিকটি খোলেনি। এমনকি দীর্ঘদিন না খোলার বিষয়ে প্রমাণ পেয়েছি। খাতাপত্রে কোন স্বাক্ষর নেই। ভেতরে ময়লা দুর্গন্ধ। প্রাথমিকভাবে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version