পহেলা বৈশাখ ঘিরে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা। দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু নির্দেশনা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ বরণ উপলক্ষে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রিসেন্টলি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেও আমরা কিছু রেডিকালাইজড সংগঠনের তৎপরতা লক্ষ্য করছি। আমরা কোনো আশঙ্কা করছি না, যে এখানে খারাপ ঘটনা ঘটবে। তবে যেহেতু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করতে চাচ্ছি, সেহেতু কোনো আশঙ্কা আমরা উড়িয়েও দিচ্ছি না। কোনো কিছুই ঘটবে না, সেরকম বলার সুযোগ নেই।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে হলে শুরু থেকেই অংশ নিতে হবে, পরা যাবে না মাস্ক। এবার মেলাপ্রঙ্গণে থাকবে না খাবারের দোকান। সেখানে শিশুদের না আনার জন্য দেওয়া হয়েছে পরামর্শ।এদিকে কিছু সংগঠনের তৎপরতার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শঙ্কা না থাকলেও, আশঙ্কার কথা বলেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘২০০১ সালে এখানে সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা চালিয়েছিল। সেটাকে মাথায় রেখে যাবতীয় নিরাপত্তার কথা ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া সম্প্রতি আমাদের কয়েকটি বন্ধু রাষ্ট্র কিছু জঙ্গির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছে। তাদের ধারণা, ভারতীয় উপমহাদেশে জঙ্গি কার্যকলাপের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই ধারণা থেকেও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রিসেন্টলি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে আমরা কিছু সংগঠনের তৎপরতা লক্ষ্য করছি। এটার কারণেই মূলত বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুরো চত্বরে সিসিটিভি থাকবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘রমনার বটমূলে প্রবেশে চেকপোস্ট থাকবে। চেকপোস্টে চেক না করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কোনো যানবাহন এ এলাকায় চলবে না। রমনা এলাকায় ডগ স্কোয়াড সুইপিং করেছে এবং আগামীকালও করা হবে। রমনা লেকের পানিতে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল থাকবে।
বর্ষবরণের মেলায় পান্তা-ইলিশ ও খাবারের দোকান থাকবে না। অনুষ্ঠানটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। দুপুর ২টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। যাতে মানুষ এখান থেকে বের হয়ে খুব সহজে বাড়ি ফিরে ইফতার করতে পারেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট থাকবে। যেখানে প্রত্যেকটি মানুষকে চেকের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এসব এলাকায় সব যানবাহন বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি সোয়াত ও ডিসপোজাল ইউনিট মোতায়েন থাকবে। আজ ও আগামীকাল পর্যন্ত পুরো এলাকা সার্চ করা হবে। পাশাপাশি পুরো চত্বর সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। বিভিন্ন স্থানে ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। পুরো এলাকাটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২০০১ সালে রমনার বটমূলে জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেই হামলাকে মাথায় রেখে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া যায়। কেউ আক্রান্ত হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কোন রাস্তা দিয়ে কীভাবে নেওয়া হবে, সেটার জন্য আলাদা দল প্রস্তুত থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ দিতে হলে মাঝপথে যোগ দেওয়া যাবে না। পহেলা বৈশাখের বিশেষ আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে হলে আগে চেকিং হয়ে প্রবেশ করতে হবে। মাঝ রাস্তায় চাইলেই কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কেউ প্রবেশের চেষ্টা করলে,পুলিশ সদস্যরা কঠোর আচরণ করতে পারে।বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান দুপুর ২টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ
দ্যা মেইল বিডি/খবর সবসময়