স্টাফ রিপোর্টার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে প্রায় ২ শতাধিক বিঘা জমির বোরো ধান। শনিবার সকাল ১০ টায় হঠাৎ করে উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষকদের উদ্যোগে নির্মিত নজর খালি বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। এতে মুহূর্তের মধ্যে পানি ঢুকে প্রায় ২ শতাধিক জমির বোরোধান তলিয়ে যায়। ফলে ডুবে যাওয়া পাকা-আধাপাকা ধান নিয়ে বর্তমানে দিশেহারা স্থানীয় কৃষকেরা। জানা যায়, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে অস্বাভিকভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। শনিবার সকালে সরেজমিনে নজর খালি বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় যাদুকাটা ও পাঠলাই নদীতে অস্বাভিক পানি বৃদ্বির ফলে টাঙ্গুয়ার হাওরের নজর খালি বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকতে থাকে। স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ আলী শেখ (৬৫) জানান, তিনি এ হাওরে ২ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিল। শনিবার নজর খালি মুখের বাঁধ ভেঙ্গে তার সমস্ত জমির ধান তলিয়ে গেছে। কাঁচা ধানগুলো পাকা হওয়ার আগেই আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের কৃষক হাবিব মিয়া বলেন, আমার নিজের ৪ বিঘাসহ প্রায় ২,শ বিঘা জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেল চোখের পলকে। এ বছর ছেলে সন্তানদের নিয়ে কষ্টে দিনাপাত করতে হবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য শিমুল আহমেদ বলেন, নদীতে অস্বাভিক পানি বৃদ্বির ফলে শনিবার সকালে হঠাৎ করে নজর খালি মুখের বাঁধটি ভেঙ্গে আট-দশটি গ্রামের কৃষকের অনেক বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে নষ্ঠ হয়েছে। সকালে ভেঙে যাওয়া বাঁধ পরিদর্শন করেছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: রায়হান কবির ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান উদ দৌলা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান উদ দৌলা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর সংরক্ষিত জলাভূমি হওয়ায় এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প গ্রহণে আইইউসিএন এর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বাঁধ নির্মাণ হয় নি। যে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করছে সেটি স্থানীয় কৃষকদের নির্মিত। কৃষি কর্মকর্তা জানান, বিশাল সংরক্ষিত জলাভূমি হওয়ায় এখানে কৃষি জমি চাষাবাদে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরো স্থানীয় কৃষকরা প্রায় দুই,শ বিঘা জমি চাষাবাদ করেছিলেন বলে আমাদের নিকট তথ্য রয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির বলেন , নজর খালি বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প নয়। স্থানীয় কৃষকরা নিজে থেকে এ বাঁধটি নির্মাণ করেছিলেন। নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধটি ভেঙে যায়। আমরা ক্ষতির পরিমান ও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করবো। পরবর্তিতে সরকারি কোন সহযোগিতা এলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের দেওয়া হবে।