বৃহস্পতিবার, জুন ২৭, ২০২৪

সম্পত্তির অংশীদার হচ্ছেন তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী

যা যা মিস করেছেন

তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে (হিজড়া) উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ সম্পর্কিত খসড়া প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানাযায়, মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো প্রস্তাবনায় তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকগণের পুরুষবাচকতা অথবা নারীবাচকতা নির্ধারণের পর চিকিৎসকের প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে তাদের সম্পদের উত্তরাধিকার অর্জন করার কথা বলা হয়েছে। লিঙ্গের পুরুষবাচকতা অথবা নারীবাচকতা নির্ধারণ করা সম্ভব না হলে তাদের নারী ও পুরুষ উত্তরাধিকার পরিমাণ যোগ করে এর অর্ধেক সম্পত্তির উত্তরাধিকার করা যেতে পারে তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিকে। এসব প্রস্তাবনা পরবর্তীতে সকলের মতামত গ্রহণ করে সংশোধন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ হলেও উত্তরাধিকার নিয়ন্ত্রণ হয়ে আসছে ধর্মীয় আইন অনুসারেই। ফলে বাবা-মা মারা গেলে এতদিন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা বঞ্চিতই হয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নতুন উত্তরাধিকার আইনের কথা জানান। পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে কাজ করার কথা জানায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, হিজড়রা কারও প্রতিপক্ষ নন। তাদের সমাজের স্বার্থেই মূলধারায় নিয়ে আসা উচিত। এতে সামাজিক অবক্ষয় নিরসন সম্ভব হবে। হিজড়ারা যেসব সামাজিক অস্বস্তিমূলক কর্ম করে, তা থেকে পরিত্রাণের জন্য তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ প্রদান করা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নাগরিক হিসেবে মানবাধিকার নিশ্চিত করা, জনগণের মধ্যে হিজড়াদের নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। হিজড়াদের মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে। এই সম্প্রদায়ের জন্য উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সরকারের দেওয়া সামাজিক সুযোগ-সুবিধা তাদের জন্য বরাদ্দ দিতে হবে।

অবহেলিত এই জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল স্রোতোধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর তাদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের ‘হিজড়া’ নামেই সম্বোধন করা হয়। সমাজসেবা অধিদফতরের হিসাবে, দেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। যদিও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হিসাবে এই সংখ্যা ২০ থেকে ৫০ হাজার।

এর আগে তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিতে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পুরুষ এবং নারীর বাইরে আলাদা লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। গত বছর থেকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ভোটার তালিকাতেও নাম লেখাতে পারছেন তারা। চলতি বছরের শুরুতে বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের একটি মাদরাসাও চালু হয়েছে।

রাজধানীর মাদারটেকের বাসিন্দা তৃতীয় লিঙ্গের সাথী জানান, আমাদের সম্পর্কে মানুষের ধারণা অত্যন্ত নেতিবাচক। অথচ জন্মের পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। কিন্তু পরিবার-সমাজ আমাদের ঘরছাড়া করেছে। উপায় না পেয়েই আমরা বাঁচার তাগিদে দলবদ্ধ হয়ে থাকছি। কোথাও কোনো কর্ম না পেয়ে পথে-ঘাটে, হাটে-বাজারে, স্টেশন বা পার্কে মেয়েলি সাজে দল বেঁধে চলাফেরা করি। স্বাভাবিক ভিক্ষুকের মতো আমরা হাত পেতে চেয়েও ভিক্ষা পাই না। বাধ্য হয়েই সাধারণত অযাচিতভাবে অশালীন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করতে হয়। অনেকেই ভয়ে বা ঝামেলা এড়াতে টাকা দেন। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, টাকা উত্তোলনের সময় আমরাও অত্যাচারের শিকার হয়ে থাকি। তখন কেউ আমাদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসে না। সমাজের কোনো বিবেকবান মানুষও পাশে এসে দাঁড়ায় না। উল্টো হিজড়াদের কটাক্ষ করে।আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক বলেন, আমরা ইসলামিক শরিয়া আইন এবং আমাদের সংবিধান অনুসারে একটি আইন করার চেষ্টা করছি। এর ফলে কোনো পরিবারের তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যের সম্পত্তির অধিকারও নিশ্চিত হবে। এখনও এই বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়নি, তবে একবার উত্থাপিত হলে তা সহজেই পাস হয়ে আইনে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক বলেন, আমরা ইসলামিক শরিয়া আইন এবং আমাদের সংবিধান অনুসারে একটি আইন করার চেষ্টা করছি। এর ফলে কোনো পরিবারের তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যের সম্পত্তির অধিকারও নিশ্চিত হবে। এখনও এই বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়নি, তবে একবার উত্থাপিত হলে তা সহজেই পাস হয়ে আইনে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security