ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট মেরাপি আগ্নেয়গিরি। যার জেরে আগ্নেয়গিরির ঢালে পর্যটন ও খনির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। জাভা দ্বীপের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত আগ্নেয়গিরিটি থেকে গরম ছাইয়ের সঙ্গে শিলা, লাভা এবং গ্যাসের মিশ্রণ নির্গত হচ্ছে। যার জেরে পাহাড়ের ঢালের নীচে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে মাউন্ট মেরাপি থেকে সাংঘাতিক লাভা নির্গত হয়ে বিপদ সৃষ্টি করেছিল। তারপর থেকেই মাউন্ট মেরাপি-কে বিপদের তালিকায় রাখা হয়েছে। জাকার্তার আগ্নেয়গিরি ও ভূতাত্ত্বিক বিপদ প্রশমন কেন্দ্রের প্রধান হানিক হুমাইডা বলেছেন, দিনের বেলায় বিস্ফোরণ ঘটে কয়েক ডজন আগুনের ফুলকি দিয়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল। যার ফলে ঢালের ২.৫ কিলোমিটার নিচ দিয়ে লাভা নদীর সৃষ্টি হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়েছে কালো ধোঁয়ার মেঘ ও গ্যাস। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। প্রায় ২৫৩ জন লোককে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয় প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রের মতে, শুক্রবার থেকে শুরু করে অন্তত ১৫ বার লাভা উদগীরণ করেছে মাউন্ট মেরাপি। সিসমিক এবং অন্যান্য তথ্য দেখে অনুমান করা হচ্ছে যে লাভা ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।ইন্দোনেশিয়ার ভূতত্ত্ব এবং আগ্নেয়গিরি গবেষণা সংস্থার প্রধান ইকো বুদি লেলোনো বলেছেন, মেরাপির ঢালে বসবাসকারী বাসিন্দাদের পাহাড় থেকে অন্তত ৭ কিলোমিটার দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং লাভা দ্বারা সৃষ্ট বিপদ সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। তিনি বলেন, মেরাপির দক্ষিণ-পশ্চিম রিমের ঠিক নীচে লাভা কেন্দ্রটি গত বছর থেকে সক্রিয় রয়েছে। জাভা দ্বীপে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরিটি পর্যটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। আপাতত আগ্নেয়গিরির ৫ কিলোমিটারের মধ্যে পাঁচটি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং আগ্নেয়গিরির নদী বরাবর খনন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।ইন্দোনেশিয়ার ১২০ টিরও বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে মাউন্ট মেরাপি সবচেয়ে সক্রিয়। এই এলাকায় কয়েক লক্ষ লোকের বসবাস। ২০১০ সালে মেরাপির শেষ বড় অগ্ন্যুৎপাতটি ঘটেছিল ,যাতে ৩৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং ২০ হাজার গ্রামবাসীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মেরাপির উচ্চতা ২ হাজার ৯৬৩ মিটার। প্যাসিফিক রিং অব ফায়ারে মেরাপির অবস্থান। আর তাই মাঝে মাঝেই সক্রিয় হয়ে ওঠে এই আগ্নেয়গিরি।

সূত্র : www.thehindu.com

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version