সিলেটের স্বনামধন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২’ পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ইউনিভার্সিটির যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি কর্তৃক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
ক্যাম্পাসের লাইব্রেরী হলে সকাল ১১ টায় শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আয়োজিত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মকর্তা- কর্মচারীগণ এবং শিক্ষার্থীরা৷
উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক শিব প্রসাদ সেন, সম্মানিত উপ-উপাচার্য মহোদয় বলেন- “নারীদের তাদের নিজেদের শক্তিশালী ভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন যেকোন পরিস্তিতি মোকাবেলা করতে পারেন”৷
তাছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন ড. নজরুল হক চৌধুরী, রেজিস্ট্রার মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি , ড. তাহের বিল্লাল খলিফা, ডিন ব্যবসা ও অর্থনীতি অনুষদ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি ৷
সেমিনারে “Female Students’ Perceptions on Cyber Bullying at Metropolitan University” — এই শিরোনামে গবেষনা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন
গাজী সাইফুল হাসান , সহযোগী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান, আইন ও বিচার বিভাগ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি। বুলিং কি, তার আইনি ব্যবস্থা এবং প্রতিকার নিয়ে গাজী সাইফুল হাসান তার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এবং “Women Empowerment in Bangladesh: Facts and Analysis” শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিনা পাল, প্রভাষক, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি।
বর্তমানে বাংলাদেশের কর্মসংস্থানে নারীদের অবস্থা তুলে ধরে রিনা পাল তার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রবন্ধ দুটি পর্যালোচনা করে বক্তব্য রাখেন ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, অর্থনীতি বিভাগ মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি।
সেমিনারের পাশাপাশি তিনদিনব্যাপী পোস্টার এবং এক মিনিটের ভিডিও প্রদর্শিত হবে। যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পোস্টার এবং ভিডিও তৈরি করে।
সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি
ড. রমা ইসলাম সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ এবং আহবায়ক, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি
বলেন জাতির উন্নতি এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে সব জায়গায় নারী বান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন স্নিগ্ধা দাস, সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ এবং সদস্য সচিব, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, এবং মিতু আক্তার, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক, আইন ও বিচার বিভাগ এবং সদস্য, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি।
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে উদযাপিত হয়। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে এই দিনটিকে বিশেষ ভাবে পালন করা হয়। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে নারীদের জন্যই শুধু এই একটা দিন আলাদা ভাবে পালন করা হয়। মূলত নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা পাশাপাশি নারীদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জন প্রকাশ করতেই আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়।
নারী দিবস পালনের পটভূমি হচ্ছে এই দিনে আমেরিকায় ঘটে যাওয়া এক আন্দোলন। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউ ইয়র্কের সুতা কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়। সেদিন বেতন বৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা আর কাজের বৈরি পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নারীরা একজোট হলে তাদের ওপর কারখানা মালিকরা আর মদদপুষ্ট প্রশাসন দমন-পীড়ন চালায়।
প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ১৯০৮ সালে জার্মানিতে এ দিনটি স্মরণে প্রথম নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছিলেন।
এ সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো প্রতি বছরের ৮ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশে ১৯৭১ সাল থেকেই ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।