জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ত্রিশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ১৫ সাংবাদিক।
শনিবার সন্ধ্যায় খবরটি নিশ্চিত করে ত্রিশাল থানার ডিউটি অফিসার এফ এম তানভীর আলম জানান, শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা একটি জিডি করেছেন। একই ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবরও একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাংবাদিকসহ অভিযোগকারী ওই ১৫ শিক্ষার্থী।
এদিকে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্মম নির্যাতনের শিকার ওয়ালিদ নিহাদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় শাস্তি নিশ্চিত করার আগে আবারও ছাত্রলীগের হুমকির ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্যও এক ধরনের হুমকি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনাবিদ্যা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে ছাত্রলীগ না করায় মারাত্মকভাবে নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনা দিন রাত দেড়টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের ৩২৪ নাম্বার কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এঘটনার আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করলে গত শুক্রবার এক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে জোর করে লিখিত বক্তব্য আদায় করা হয়, যার মধ্যে সংবাদ কর্মীর নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযোগকারী ১৫ জন অনিরাপদ রয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ছাত্রলীগের হুমকির শিকার গণমাধ্যম কর্মী ও শিক্ষার্থীরা হলেন- দৈনিক দেশ রূপান্তর প্রতিনিধি নিহার সরকার অংকুর, আমার সংবাদ এর হাবিবউল্লাহ বেলালি, যায়যায়দিনের বায়েজিদ হাসান, খোলা কাগজের তিতলি দাস, একুশে টিভি অনলাইনের আশিক আরেফিন, দৈনিক সময়ের আলোর আশিকুর রহমান, বাংলা ভিশন অনলাইনের জিসাদুজ্জামান জিসান, বাংলা ট্রিবিউনের মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, দৈনিক অধিকারের সরকার আব্দুল্লাহ তুহিন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের ফটোগ্রাফার মোস্তাফিজুর রহমান ও নওশাদ, প্রেসক্লাবের সদস্য সিফাত শাহরিয়ার প্রিয়ান, নওয়াব শওকত জাহান কিবরিয়া, শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য, ফজলুল হক পাভেল।
জানতে চাইলে সংবাদকর্মীরা বলেন, আমরা ওয়ালিদ নিহাদের উপর নির্যাতনের ঘটনার সংবাদ করায় বিভিন্নভাবে তারা সাংবাদিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। যা গত শুক্রবার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ওইদিন রাতে এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেয় যে, এই আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা করার পরিকল্পনার নেতৃত্বে রয়েছেন সাংবাদিকরা।
ছাত্রলীগের এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।।