স্টাফ রিপোর্টার:
‘ভালো থাকুক মায়ের ভাষা’ স্লোগান নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সোমবার ৫২ কিলোমিটার পথ দৌড়ালেন সুনামগঞ্জের ১০ তরুণ। ভোর সাড়ে চারটায় সিলেট থেকে এই দৌড় শুরু হয়। শেষ হয় সুনামগঞ্জ পৌর ভবন চত্বরে এসে। এতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা একে একে বেলা একটার দিকে সুনামগঞ্জে এসে পৌঁছান। সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখতসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোক ফুল দিয়ে তাঁদের বরণ করেন।
আয়োজকেরা জানান, তাঁরা সবাই সুনামগঞ্জের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে সিলেট, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছেন তাঁরা। প্রথমবারের মতো এই আয়োজনে এই তরুণ দৌড়বিদদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সাইক্লিস্টরাও অংশ নেন। শুরুটা হয় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভোর চারটায় ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে। পরে ৫২ কিলোমিটার পথ হিসাব করে সিলেট শহরতলির মোল্লারগাঁও এলাকা থেকে সুনামগঞ্জ অভিমুখে দৌড় শুরু করেন তাঁরা। ১৯৫২ সাল স্মরণে রেখে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের এই ৫২ কিলোমিটার পথ নির্ধারণ করা হয়। এতে অংশ নেন তরুণ দৌড়বিদ আমিনুল হক, সুমন মুনশি, মিজানুর রহমান, মো. রায়হান আলম, শরীফ সোহাগ, মামুনুর রশিদ, এবাদ উল্লাহ, হিফজুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম ও হাসান মাসুদ। পথে পথে যাত্রাবিরতিতে চলে ‘ভালো থাকুক মায়ের ভাষা’ নিয়ে প্রচারণা। বেলা ১১টার দিকে প্রথমেই সুনামগঞ্জে এসে পৌঁছান রায়হান আলম। পরে একে একে আসেন অন্যরা।
সর্বশেষ বেলা একটায় এসে পৌঁছান আমিনুল হক। এ সময় সুনামগঞ্জ পৌর চত্বরে তাঁদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। পরে মেয়র নাদের বখত দৌড়ে অংশ নেওয়া সবাইকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন।
মেয়র নাদের বখত বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের গর্ব ও অহংকারের দিন। আমাদের চেতনার বাতিঘর। পৃথিবীতে আর কোনো জাতি নেই, যারা মায়ের ভাষার সুরক্ষার জন্য জীবন দিয়েছে। বিশ্ব আমাদের সেই স্বীকৃতি দিয়েছে। তরুণদের এই আয়োজনে আমরা মুগ্ধ, অনুপ্রাণিত। নতুন প্রজন্ম মহান একুশের চেতনা ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
এই আনুষ্ঠানিকতায় আরও অংশ নেন এবং ১০ তরুণকে শুভেচ্ছা জানান জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি গৌরী ভট্টাচার্য, সিনিয়র সাংবাদিক পঙ্কজ কান্তি দে, পৌর কাউন্সিলর চঞ্চল কুমার লৌহ, জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী মতিয়া বেগম, সাংবাদিক শামস শামীম, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আসাদ মনি প্রমুখ।
এই আয়োজনের সমন্বয়কারী আমিনুল হক বলেন, ‘আমাদের মায়ের ভাষা, বাঙালির প্রাণের ভাষা বাংলা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষা সুরক্ষার লড়াইয়ে যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই আয়োজন। একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পেয়েছে বিশ্ব স্বীকৃতি। গৌরবের ভিত গড়ে দেওয়া বাংলা মায়ের ভাষা আজ বিশ্বস্বীকৃত। এই স্বীকৃতিকে চির জাগ্রত করে রাখতে আমরা চাই সব সময় ভালো থাকুক মায়ের ভাষা। ’