মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর (অব.) মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে (৭০) মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্ত হওয়ার পর স্ত্রীকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন খায়রুজ্জামান। আজ বুধবার ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে এ প্রতিবদন প্রকাশ করেছে। মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানের আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘তার মুক্তিতে কোনো শর্ত আরোপ করা হয়নি। তিনি এখন পুরোপুরি মুক্ত।’ মুক্তির পর মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দ্রুত তার স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান বলে জানিয়েছেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন মেজর (অব.) এম খায়রুজ্জামান। ১৯৭৯ সালে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আত্তীকৃত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা থাকাকালে তাকে ফিলিপাইন থেকে ফেরত এনে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে অবসর দেওয়া হয়।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৪ সালে ট্রায়াল কোর্টে জেলহত্যা মামলা থেকে খায়রুজ্জামানকে খালাস দেওয়া হয়। তবে মামলা চলাকালেই ‘নজিরবিহীন’ ভাবে তাকে পদোন্নতি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে তাকে ‘সসম্মানে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে। ২০০৫ সালে তাকে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদেও নিয়োগ দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের আগস্টে তাকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার করা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি এম খায়রুজ্জমানকে কুয়ালালামপর থেকে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর ওই বছরের ৩ জুলাই পর্যন্ত ছুটির আবেদন করেন তিনি। ৪ জুলাই থেকে তার এলপিআরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে সরকার তার ছুটির আবেদন অগ্রাহ্য করে ৮ মার্চের মধ্যে দেশে ফিরতে আদেশ দেয়। দেশে ফেরার আদেশ পেয়ে ২৪ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব ত্যাগ করে নিরুদ্দেশ হন। সরকার এরপর তার পাসপোর্ট বাতিল করে।