দেড় মাসের মাথায় ওয়ান ইলেভেন এর সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হলো। তারা সদ্য ক্ষমতাচ্যুত বিএনপি নেতৃবৃন্দ থেকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের প্রতি খড়গহস্ত হল। এরই মাঝে নাসিম দিনে রাতে আগের চেয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেন এবং সরকারিভাবে সংযুক্ত না হয়েও নেত্রীর সাথে কাজ করতে থাকেন।
২০০৭ এর মার্চে নাসিমসহ সুধাসদনে গেলাম। নাসিম তার কাজ করছিলেন, তখন নেত্রী আমাকে বললেন, আলাউদ্দিন যেন বাসায় না থাকে। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি কোন কারণে গ্রেফতার হলে যেখানে সাইন করতে বলে, যা লিখতে বলে লিখে দিতে। এগুলোর কোন মূল্য নেই আমার কাছে। কথাগুলো শুনে আমার ভেতরে মোচড় দিয়ে উঠল। বললাম, ‘না আপা। সে কখনো আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানিয়ে বলবে না।’
তারপর থেকে তো আর সে বাসায় থাকত না। প্রথম কিছুদিন বিজিএমইএ নেতা সোহেল ভাইয়ের বাসাতে পরে সফিকুল ইসলাম (রামগঞ্জ) ভাইয়ের ডিওএইচএস-এর বাসাতে থাকত। আমি নাইট ডিউটির কথা বলে ওর সাথে লুকিয়ে দেখা করতে যেতাম। নেত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর জুলাই মাসের ২৫ তারিখ নাসিম আমাকে বলল ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও কানাডার ভিসা ও সরকারি জিও নিয়ে রেখেছি। যে কোনোদিন চলে যাব। পরদিন রাতে কোন এক অজানা নাম্বার থেকে ফোনে জানাল দেশের বাইরে যাচ্ছে সে। কোন দেশে কয়টায় ফ্লাইট কিছুই বলল না। ১ দিন পরেই লন্ডন হতে ফোনে কথা বলল।
সেপ্টেম্বরের দিকে আমি আর রাকা কানাডা গেলাম। বোন নীনার বাসায় উঠলাম। নাসিম কানাডায় যাওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি হল। ১ মাস পর ঠিক হল আমরা বাসা নেব। বাসা নেওয়ার সময় রাকার স্কুল কত দূরে দেখছিলাম। যে বাসা দেখি সেটাই স্কুল থেকে ১-২ মাইল দূরে, তখনই রাকা উত্তেজিত হয়ে বলত “আমি হেঁটে হেঁটে যেতে পারব।” ওকে বোঝাতে পারছিলাম না যে প্রচণ্ড শীতে হেঁটে যাওয়া সম্ভব না।
চলবে…
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক : অধ্যাপক, কার্ডিওলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়