আমিনুল হক, সুনামগঞ্জ:
কলেজছাত্র আল আমিন হত্যা মামলায় তার তিন সহপাঠীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার এ রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের ছনুয়া গ্রামের রফিক আলীর ছেলে আক্কাছ মিয়া (পলাতক), মৌজরাই গ্রামের আরজক আলীর পুত্র আজিজুল ইসলাম (পলাতক) ও জাউয়াবাজার ইউনিয়নের লক্ষণসোম গ্রামের আব্দুল হাসিমের পুত্র সাইদুল হক। দণ্ডপ্রাপ্তদের আক্কাছ মিয়া ও আজিজুল হক পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ছাতক উপজেলার বড়কাঁপন গ্রামের আনফর আলীর পুত্র আল আমিন দেবেরগাঁও গ্রামে শফিক উদ্দিনের বাড়িতে লজিং থেকে জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগে পড়ালেখা করতেন। তার ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। ২০১৬ সালে ১৭ অক্টোবর সকালে ওই কলেজ ক্যাম্পাসে আসামিদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। দুপুরে কথাকাটাকাটির দ্বন্দ্ব শেষ হওয়ার পর আল আমিন কলেজ ক্যাম্পাস থেকে নিজ গ্রামের বাড়ি বড়কাঁপনের উদ্দেশে রওনা দেয়।
পরে আসামি আক্কাছ মিয়া, আজিজুল ইসলাম ও সাইদুল হক প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আল আমিনের পিছু নিয়ে বড়কাঁপন পয়েন্টে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিন ও তার দুই বন্ধু দিলাল আহমদ, জুনেল আহমদ ও নাজমুল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের চিকিৎসার জন্য কৈতক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় তার সহপাঠীরা সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন। তিন বন্ধুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহত আল আমিনের বাবা আনফর আলী বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ঘটনার দিনই ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. নূর মিয়া ৩০ জুন ২০১৭ তারিখে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। আদালত ৬ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে অভিযোগপত্র আমলে নেন। মামলায় ২৩ জন সাক্ষী প্রদান করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রসেনজিৎ দে জানান, আসামিপক্ষ আদালতের রায়ে বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ড. খায়রুল কবির রুমেন এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা।