অবশেষ সফলভাবে উৎক্ষেপণ হয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের। একদিন আগেই এই টেলিস্কোপ লঞ্চের কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয় উৎক্ষেপণ। তাই বড়দিনেই যাত্রা শুরু করেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। সফলভাবেই উৎক্ষেপণ হয়েছে এই স্পেস টেলিস্কোপের।
নাসার পক্ষে জানানো হয়েছে, মহাকাশে নিরাপদেই রয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। গ্রাউন্ড কন্ট্রোলারের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগও করেছে। পৃথিবী থেকে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন কিলোমিটার গন্তব্যে পৌঁছতে হবে এই টেলিস্কোপকে।
এ যাবত যত স্পেস টেলিস্কোপ তৈরি করা হয়েছে, তার মধ্যে এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপই বৃহত্তম অর্থাৎ সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। মহাকাশের যেসমস্ত রহস্য এখনও উন্মোচিত হয়নি, সেইসব গভীর এবং দূরবর্তী অঞ্চল সম্পর্কে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আগ্রহ বরাবরই বেশি। মহাকাশ নিয়ে যারা চর্চা করেন, তাদের মনেও কিন্তু রয়েছে অনেক প্রশ্ন। আর এইসব কৌতূহল মেটানোর জন্যই মহাকাশে পাঠানো হয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।
২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই টেলিস্কোপের উৎক্ষেপণ হয়েছে। একটি এরিয়ান ৫ রকেটের সাহায্যে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং বৃহত্তম স্পেস টেলিস্কোপ। প্রায় একমাস সফরের পর মহাকাশে গন্তব্যে পৌঁছবে আগামী প্রজন্মের এই স্পেস অবজারভেটরি বা মহাকাশ পর্যবেক্ষক। ফ্রেঞ্চ গুয়ানার কৌরো স্পেসপোর্ট থেকে এই টেলিস্কোপের লঞ্চ সম্পন্ন হয়েছে। আসলে পৃথিবীর প্রথম অবস্থায় তারা, ছায়াপথ কেমন ছিল- মূলত তারই সন্ধানে যাচ্ছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। টাইমমেশিনে পৃথিবীর ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা সাড়ে ১৩ হাজার কোটি বছর আগে ফিরে যাবে এই টেলিস্কোপ।এর আগে ২২ ডিসেম্বর প্রথমে এই টেলিস্কোপ লঞ্চের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তারপর তা পিছিয়ে ২৪ ডিসেম্বর করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ২৫ ডিসেম্বর লঞ্চ হয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। ১৯৬১ সাল ও তার পরবর্তী বেশ কিছু বছর পর্যন্ত নাসার প্রশাসক ছিলেন জেমস ই ওয়েব। তার নামেই বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (সিএসএ) – এই তিন সংস্থার উদ্যোগে তৈরি হয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। হাবল স্পেস টেলিস্কোপের পরিপূরক এবং উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচিত হবে এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ বা ওয়েব।
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ বিগত ৩০ বছর ধর মহাকাশের পর্যবেক্ষণে জোরদার ছাপ রেখেছে। অনুমান এতদিন বিজ্ঞানীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা এই টেলিস্কোপকেও কার্যকারিতায় পাল্লা দেবে জেমস ওয়েস স্পেস টেলিস্কোপ। কারণ শুধু আকার-আয়তনে নয়, এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ অন্য আর একটি ব্যাপারেও হাবল টেলিস্কোপের তুলনায় আলাদা। জেমস ওয়াব স্পেস টেলিস্কোপে ইনফ্রারেডও ধরা পড়বে। এই বৈশিষ্ট্য হাবল স্পেস টেলিস্কোপে নেই।