দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

তাওবা শব্দের অর্থ হলো- ফিরে আসা। যখন তাওবা শব্দটির সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে হয় তখন তার তাৎপর্য দাঁড়ায়, বান্দার কৃত অন্যায়ের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া, সে অন্যায় সম্পূর্ণরূপে বর্জন করে। ভবিষ্যতে এমন অন্যায় না করার দৃঢ়-সংকল্প করে। এমন দৃঢ়-সংকল্প করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার নামই হচ্ছে তাওবা।
গুনাহের একমাত্র প্রতিকার হচ্ছে, তাওবা ও ইস্তেগফার। মানুষ যত গুনাহই করুক না কেন, সঠিক পন্থায় তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা তার সব গুনাহই মাফ করবেন।

আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেছেন-‘আপনি বলে দিন, (আল্লাহ বলেন) হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ সূরা যুমার: ৫৩

তাওবা দ্বারা আল্লাহর সঙ্গে বান্দার মহব্বত ও ভালোবাসার সম্পর্ক কায়েম হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন- ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালবাসেন এবং তাদেরকেও ভালবাসেন যারা পবিত্র থাকে।’ সূরা বাক্বারা: ২২২

তাওবার মাধ্যমে মানুষ ইহকাল ও পরকালের সফলতা অর্জন করে। আল্লাহ তা’আলা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তাওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ সূরা নূর: ৩১

গুনাহ করার পর বান্দা যখন নিজের অপরাধ বুঝতে পেরে সত্যিকার তাওবা করে তখন আল্লাহ তা’আলা শুধু তার সেই গুনাহকেই ক্ষমা করেন না; বরং তার গুনাহকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেন। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন- ‘তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, ফলে আল্লাহ্ তাদের গুণাহসমূহ নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন। আর আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ সূরা ফুরকান: ৭০

তাওবা জান্নাত লাভের একটি বিরাট মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা তাওবার বিনিময়ে জান্নাত দান করার ওয়াদা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত।’ সূরা তাহরীম: ৮

আল্লাহ তা’আলা তাওবাকারীকে দুনিয়াতেই নগদ পুরষ্কার স্বরূপ জীবন ধারণের উত্তম উপায় উপকরণ দান করবেন। ইরশাদ হয়েছে-

‘আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও। তারপর তার কাছে তাওবা কর (ফিরে যাও), তাহলে তিনি তোমাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম ভোগ-উপকরণ দান করবেন। এবং তিনি প্রত্যেক গুণীজনকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দান করবেন।’সূরা হূদ: ৩

তাওবার অসীলায় আল্লাহ তা’আলা প্রয়োজনের সময় বৃষ্টি দান করেন এবং ঈমান আমল ও দুনিয়াবি কাজের শক্তিও বৃদ্ধি করে দেন। হযরত হুদ আ. এর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, হুদ তার সম্প্রদায়ের লোকদের উদ্দেশ্যে বলেছিল- ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও অতঃপর তার কাছে তাওবা কর, তাহলে তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন।’ সূরা হূদ: ৫২

বান্দার তাওবার অসীলায় আল্লাহ তা’আলা তার দু’আ কবুল করেন। হযরত সালেহ আ. এর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, সালেহ তার সম্প্রদায়ের লোকদের বলেছিল- ‘হে আমার কওম! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো (সত্য) মাবুদ নেই। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে এবং সেখানে তোমাদের জন্য আবাদের ব্যবস্থা করেছেন। সুতরাং তোমরা তার কাছে ক্ষমা চাও, অতঃপর তাঁরই কাছে তাওবা কর। নিশ্চয় আমার রব অতি নিকটে এবং(বান্দার আহ্বানে) সাড়া দানকারী।’ সূরা হূদ: ৬১

তাওবা ও ইস্তেগফারের অসীলায় আল্লাহ তাআলা স্বীয় আজাব ও বালা-মুসিবত দূর করে দেন। ইরশাদ হয়েছে- ‘আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদেরকে আজাব দিবেন এ অবস্থায় যে, তুমি তাদের মাঝে বিদ্যমান এবং আল্লাহ তাদেরকে আজাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে।’ সূরা আনফাল: ৩৩

তাওবা ও ইস্তেগফারের বরকতে আল্লাহ তা’আলা বান্দার পার্থিব প্রয়োজনাদি পূরণ করেন। তাকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে সমৃদ্ধি দান করেন।

হযরত নূহ আ. এর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, নূহ তার সম্প্রদায়ের লোকদের বলেছিল- ‘তোমরা তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় তিনি মহাক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন। এবং তোমাদেরকে সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে। আর তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা।’ সূরা নূহ: ১০-১২

তাওবা ও ইস্তেগফার দ্বারা পেরেশানি দূর হয়, বিপদ থেকে মুক্ত লাভ হয় এবং রিযিক বৃদ্ধি পায়। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত।

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) করবে, আল্লাহ তাকে প্রত্যেক বিপদ হতে মুক্তির ব্যবস্থা করবেন, সকল দুশ্চিন্তা হতে মুক্ত করবেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিযিক্ব দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।’ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস: ১৫১৮

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নিয়মিত তাওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে সমূহ কল্যাণ লাভ করার এবং পাকসাফ জিন্দেগী বানানোর তাওফিক দান করুন।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version