নারীদের নিয়ে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব হারানো ডা. মুরাদ হাসান গোপনে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন। আজ রাতেই তিনি কানাডায় পাড়ি দিতে পারেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে কানাডাগামী একটি বিমানের টিকিট কেটেছেনও তিনি। সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পর তার যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল সেটি তিনি ফেরত দিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতেই রাজধানীর শাহবাগ থানায় ডা. মুরাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও।
এছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুরাদ হাসানের অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গত সোমবার একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে তার অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ফাঁস হওয়ায় পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান ডা. মুরাদ। ওই দিনই তিনি ঢাকা থেকে গোপনে চলে যান চট্টগ্রাম।
উঠেন র্যাডিসন ব্লু হোটেলে। সর্বশেষ ওই হোটেল ছেড়ে অনেকটা আত্মগোপনে চলে যান।
সোমবার রাতেই তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন আত্মগোপনে থেকেই ই-মেইলে মন্ত্রণালয়ে তার দপ্তরে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। ইতিমধ্যে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন জারির পর সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে মন্ত্রিত্ব হারানোর পর একে একে সব হারাচ্ছেন ডা. মুরাদ। তার নির্বাচনী এলাকা সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকেও ডা. মুরাদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকেও মুরাদকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। এছাড়া ডা. মুরাদের এমপি পদ থাকার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।
ওদিকে ডা. মুরাদের সর্বশেষ অবস্থান জানা যায়নি। তার ব্যবহৃত ফোন নাম্বারটিতে ফোন করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এড়িয়ে চলছেন গণমাধ্যমকেও। পদত্যাগের বিষয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি না হলেও তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে ক্ষমা চেয়ে দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। প্রথম স্ট্যাটাসে তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় নারীদের কাছে ক্ষমা চান। দ্বিতীয় স্ট্যাটাসটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চান।