রাজধানীতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে রিকশা গুঁড়িয়ে দিয়ে পাঁচ মাসের শিশুসহ তিন আরোহীকে আহত করার ঘটনায় গ্রেফতার কিশোরকে গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। রাজধানীর বেইলি রোডে এ দুর্ঘটনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে সেই কিশোর চালককে চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওই কিশোরকে ঢাকার আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। তার পক্ষে তার বাবা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তারজেল হোসেন জামিন আবেদন করেন। দুটি আবেদনই নাকচ করে কিশোরকে গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার ৬ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বিচারক আল-মামুন।
শুনানির সময় বিচারক ওই কিশোরকে দেখিয়ে বলেন, “ওর তো গাড়ি চালানোর বয়স হয়নি। লাইসেন্স নাই। তার হাতে গাড়ি দিল কেন? ওর বাবা এত দায়িত্বহীন কেন?”
গাড়ি কার নামে নিবন্ধিত জানতে চাইলে ওই কিশোর বলে, তার বাবার নামে গাড়ি। তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেসমিন আক্তার বিচারককে বলেন, “সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি, ৬ মাস আগে কেনা হয়েছে। তার বাবা সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।”
বিচারক তারজেলের কাছে তার ছেলের গাড়ি চালানোর লাইসেন্স আছে কি না জানতে চাইলে তিনি না সূচক জবাব দিয়ে বলেন, তার ছেলে যে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিল, তা তিনি জানতেন না। তখন বিচারক তাকে বলেন, “সাজা তো আসলে আপনার হওয়া উচিত।”
কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওই কিশোরকে বিচারক বলেন, “এখনো অনেক সময় পড়ে আছে। বড় হও, অনেক গাড়ি চালাতে পারবে।
“তুমি তো একজনের ছেলে। যে শিশুটাকে আহত করেছো সেও তো কারো না কারো ছেলে। কত সময়, কত দিন পড়ে আছে, জীবনটা কী এতো ছোট!”
শিশু বিবেচনায় রিমান্ড আবেদন নাকচ করার কথা জানালেও কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে দায়িত্বশীল কর্মকর্তার উপস্থিতিতে একদিন জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন বিচারক।
গত শুক্রবার বিকালে বেইলি রোডে বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা প্রাইভেটকারের ধাক্কায় গুঁড়িয়ে যায় একটি রিকশা। এ সময় রিকশার যাত্রী ফখরুল হাসানের কোলে থাকা পাঁচ মাসের একটি শিশু দূরে ছিটকে পড়লে তার পা ভেঙে যায়। হাত ভেঙেছে ফখরুলেরও। এ ঘটনায় আহত হন রিকশাচালকও। এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পরে ওই কিশোরকে চুয়াডাঙ্গা থেকে আটক করা হয়।