লোকমান আহমেদ,সিলেট প্রতিনিধি: সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি কাউন্সিলর অফিসকে দীর্ঘদিন থেকে বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও জামায়াতের অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। এতে স্থানীয় এলাকাবাসীর নিরাপত্তার পাশাপাশি সেবা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয়রা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সিলেট জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরেও প্রেরণ করেছেন।
অভিযোগে স্বাক্ষর দেন এইচ এম ফারুক হোসেন, জাহিদুল হোসেন মাসুদ, আবুল বশর হোসেইন, সোহেল আহমদ, মখলিছুর রহমান, মনিরুল হক সাকিব, মুহিবুল হক শাওন, রাব্বি আহমদ তানভীর, সবুর আহমদ দিপু।
অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি (সিলেট বিভাগ) ও সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের পদে রয়েছেন। তিনি বিএনপি থেকে নির্বাচন করে কাউন্সিলরও হয়েছেন। কিন্তু কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি কাউন্সিলর অফিসকে বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও জামায়াতের অফিস হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ জন্য ওয়ার্ডের সাধারণ নাগরিকদের সেবা পেতে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। সেবা প্রদানে বিলম্ব হলেও কোন সেবাগ্রহীতা ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা-কর্মীদের ভয়ে কিছু বলার সাহস পান না। প্রায়ই রাতে উক্ত অফিসে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে গোপন মিটিং হয়। প্রায় সময় কাউন্সিলর উনার বলয়ের জামাত-বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে আধিপত্য বিস্তার করতে এলাকায় মহড়া দেন।
তারা আরো উল্লেখ করেন, বিগত ৬ই সেপ্টেম্বর সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটির নেতাদের নিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে সভা করে উক্ত কাউন্সিলর কার্যালয়কে সেচ্ছা সেবক দলের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ঘোষনা করা হয় যা বিভিন্ন নিউজ মিডিয়ায় উঠে আসে, যার প্রমাণ হিসেবে অভিযোগকারীরা নিউজের কপি প্রদান করেন। তারা জানান, সব সময় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের যাতায়াত থাকায় স্থানীয় নাগরিকরা কাউন্সিলর অফিসে যেতে ভয় পান। ওয়ার্ডের জনগণ সন্ত্রাসীদের ভয়ে দীর্ঘদিন কিছু বলতে পারেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমের বিরুদ্ধে হতদরিদ্রের চাল আত্মসাত, দলীয় লোক দেখে দেখে ভাতা প্রদানসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আর সহ্য করতে না পেরে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগকারীরা আরও জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার সিটি কর্পোরেশন ও সিটির অধীনস্থ কাউন্সিলদের কার্যালয়ের যাবতীয় খরচ বহন করেন কিন্তু কাউন্সিলর শামীম সেই সবের তোয়াক্কা না করে কার্যালয়কে জামাত-বিএনপির অফিস বানিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি ও আধিপত্য বিস্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
এলাকার জনগনের জানমাল রক্ষা ও সরকারি টাকায় চলমান কাউন্সিলর অফিস যাতে জামাত-বিএনপির আশ্রয়স্থল না হয় সে জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহ প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন, আমি বিএনপির রাজনীতি করি। প্রয়োজনে বিএনপি নেতার আসতেই পারেন আমার অফিসে। তবে, আমি জামায়াতের রাজনীতি করি না, জামায়াতের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করলে ওয়ার্ডবাসীর সেবা ব্যাহত হবে কেন। সেবা ব্যাহত হলে একাধারে ৫ বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হতাম না।