মোঃ রোমান বেপারী, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের এক কোটি সত্তর লাখ ষাট হাজার পাঁচশত টাকা প্রতারণার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী।
মাদারীপুর যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা ও মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড এর চকবাজার শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার শেখ আনোয়ার হোসেনের নামে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লার বিরুদ্ধে সরকারি টাকা প্রতারণার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের হওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের শিবচরে এবং ঢাকা (যাত্রবাড়ী) মাওয়া-ভাঙ্গা, বরিশাল-পটুয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের ৫৫ কি: মি: এ আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর অবস্থিত “হাজী শরীয়তুল্লাহ সেতুর” উপর দিয়ে যানবাহন পারাপারের নিমিত্তে ২২ জুন ২০১৮ সাল থেকে ৩০ জুন ২০২১ খ্রি: পর্যন্ত ১০৪৪ দিনের জন্য টোল আদায়ের ইজারা কোটেশন বিজ্ঞপ্তি নং ৩/ইই,এম,আর,ডি/২০১৭-২০১৮ খ্রি: আট বার আহবান করা হয়। উক্ত ইজারা কোটেশনের তুলনামূলক বিবরণী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সওজ রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল, সড়ক ভবন, তেজগাঁও, ঢাকার দপ্তর স্মারক নং ২২ র: বে: ৬ আগস্ট ২০১৮ খ্রি: মূলে প্রধান প্রকৌশলী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, সড়ক ভবন, তেজগাঁও, ঢাকা কর্তৃক বে: স: স্মারক নং ১৪২ প্র: প্র: এর মাধ্যমে উদ্ভুত মূল্য ভ্যাট ও আয়করসহ ১২ কোটি আঠাশ লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার ছয়শত টাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস.এস. ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর মালিক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লার সাথে চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২২ আগস্ট ২০১৮ খ্রি: হতে টোল আদায় শুরু করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দ্বিতীয় পক্ষ নিধার্রিত সময়ের মধ্যে অত্র দফতরে এক কোটি সত্তর লাখ ষাট হাজার পাঁচশত টাকা জমা দেন নাই। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বাকি টাকা পরিশোধ করার জন্য ইজারাদারকে বারবার তাগিদ দিলে টাকা পরিশোধ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এজন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দুই সেপ্টেম্বর মাদারীপুর যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এছাড়াও মাদারীপুর জেলা কারাগার নির্মাণের সময় এস.এস. ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর মালিক ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লার বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। তখন তিনি ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বাধ্য হন।
মামলার বাদী মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মাওয়া-ভাঙ্গা, বরিশাল-পটুয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর অবস্থিত “হাজী শরীয়তুল্লাহ সেতুর” উপর দিয়ে যানবাহন পারাপারের নিমিত্তে ২২ জুন ২০১৮ সাল থেকে ৩০ জুন ২০২১ খ্রি: পর্যন্ত সরকারি বিধি মোতাবেক টোল আদায়ের ইজারা দেয়া হয় এস.এস. ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর মালিক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লাকে। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস.এস. ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর মালিক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা ও এর সাথে জড়িত মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড এর চকবাজার শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার শেখ আনোয়ার হোসেন এক কোটি সত্তর লাখ ষাট হাজার পাঁচশত টাকা পরিশোধ না করায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মাদারীপুর জজ কোর্টের সরকারি উকিল (জি.পি) জাকির হোসেন লোকমান বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর অবস্থিত “হাজী শরীয়তুল্লাহ সেতুর” উপর দিয়ে যানবাহন পারাপারের নিমিত্তে এস.এস. ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর মালিক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লার সাথে চুক্তি বদ্ধ হয় মাদারীপুর সড়ক বিভাগ। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এক কোটি সত্তর লাখ ষাট হাজার পাঁচশত টাকা পরিশোধ না করায় মাদারীপুর যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।