ফরহাদ খোন্দকার , ফেনী প্রতিনিধি :
বলাৎকারের কথা প্রকাশ করে দেয়ার ভয়ে আরাফাতকে হত্যা করে অধ্যক্ষ মোশারফ
আদালত প্রতিবেদক।
সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্র আরাফাত হোসেন (৯)কে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন (৪২) ওই ছাত্রকে বলৎকারের পর বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়েই হত্যার পথ বেছে নেন বলে আদালতকে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো.জাকির হোসেনের আদালতে অধ্যক্ষের দেয়া জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়। মোশারফ হোসেন উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চরলক্ষীগঞ্জ হাফেজ সামছুল হক (রঃ) নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার অধ্যক্ষ। তার বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জে উপজেলায়। নিহতের আরাফাত একই মাদরাসা ও এতিমখানার ছাত্র ও স্থানীয় চরমজলিশপুর ইউনিয়নের ছয়আনি গ্রামের নাজের কোম্পানীর বাড়ির ফানা উল্লাহর ছেলে।
প্রসঙ্গত; রবিবার (২২ আগস্ট) ভোর ৪টার দিকে সোনাগাজী চরলক্ষীগঞ্জ হাফেজ সামছুল হক (রঃ) নুরানী হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগের ছাত্র আরাফাত হোসেন (৯)কে হত্যা করে মাদ্রাসা সংলগ্ন দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউপির মোমারিজপুর এলাকার একটি ডোবায় লাশ ফেলে দেয় দূর্বৃত্তরা।
এরপর পানিতে ডুবে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকায় প্রচার করে তারা। খবর পেয়ে দাগনভূঞা থানা পুলিশ সেখান থেকে লাশ উদ্ধারের পর মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় আরাফাতের পিতা বাদী হয়ে এ ঘটনায় অধ্যক্ষসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
এরপর ওই দিন রাতেই মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন ও আরাফাতের এক সহপাঠিসহ এজহার নামীয় আরো দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সোমবার (২৩ আগস্ট) গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন (৪২)কে ৪দিনের, সহকারী শিক্ষক আজিম উদ্দিন(৩৩) ও নুর আলীকে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।একই সাথে গ্রেপ্তারকৃত জোবায়ের আলম ফাইজ (১১)কে গাজীপুর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রেরণের আদেশ দেওয়া হয়।
দাগনভূঞা থানার ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ,৪দিনের রিমোন্ড শেষে অধ্যক্ষকে আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবনন্দি প্রদান করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে আদালত সূত্রে জানা যায়,অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দি প্রদানকালে আদালতে স্বীকার করেন ,এর আগেও তিনি আরাফাতকে বলৎকার করেছেন।
শনিবার(২১ আগস্ট) রাতে বলৎকারের পর আরাফাত বিষয়টি তার পিতাকে বলে দেবে বলে অধ্যক্ষকে জানালে তিনি হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। এপর্যায়ে গলা টিপে আরাফাতকে হত্যা করে লাশ মাদ্রাসার সংলগ্ন ওই ডোবায় ফেলে দেন।