মোঃ রাসেল আহম্মেদ, বগুড়া প্রতিনিধিঃ
কথিত জিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে ময়মনসিংহ থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যাওয়ার পথে এক স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে বগুড়ার শাজাহানপুর থানা পুলিশ।
সোমবার (২৩ আগস্ট) রাতে রংপুরগামী বাহন নামের একটি বাস থেকে ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া স্কুল ছাত্রী স্মৃতি (১৫) ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার দিউ গ্রামের ইদ্রিস আলীর মেয়ে এবং স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। মেয়েটিকে উদ্ধারে সহযোগিতা করেন ওই বাসের যাত্রী বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রধান প্রফেসর রমজান আলী আকন্দ।
প্রফেসর রমজান আলী জানান, বাহন পরিবহনের বাসটিতে তার পাশের সিটের যাত্রী ছিল মেয়েটি। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে আসার পর মেয়েটি জানতে চায় পলাশবাড়ী যেতে কত সময় লাগবে। পলাশবাড়ী কোথায় যাবে জানতে চাইলে মেয়েটি বলে দুলাভাই এর বাড়িতে। এর মধ্যে পরিবার থেকে বার বার ফোন আসতে থাকলে মেয়েটি তাদের কাউকে চেনে না এবং নিজের নাম ভিন্ন বলতে থাকে। এক পর্যায় ময়মনসিংহ থেকে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক ( এসআই) মেয়েটির নম্বরে ফোন দেয়। এসময় পাশের সিটের যাত্রী রমজান আলী তার ফোন নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানতে পারেন মেয়েটি বাড়ির কাউকে না জানিয়ে বের হয়েছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রফেসর রমজান আলী বগুড়া জেলা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন। রাত সাড়ে ৮টায় বাসটি শাজাহানপুর পৌঁছিলে পুলিশ মেয়েটিকে থানা হেফাজতে নেয়।
থানা হেফাজতে মেয়েটি জানায়, মহররম মাসের ১০ তারিখ রাত ৩টায় জিনের বাদশা পরিচয়ে তাকে ফোন করা হয়। তাকে গুপ্ত ধনের প্রলোভন দেখিয়ে একাই গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে আসতে বলা হয়। সেখান থেকে তাকে পলাশবাড়ী নিয়ে গিয়ে গুপ্তধন দেয়ার কথা বলা হয়। জিনের বাদশার কথামত একা না আসলে তাদের পরিবারে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে বলা হয়। জিনের বাদশার গুপ্তধন ও পরিবারকে ক্ষতি থেকে রেহাই দিতে মেয়েটি বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে গোবিন্দগঞ্জে যাওয়ার জন্য রওনা হয়।
প্রফেসর শাজাহান আলী বলেন, মেয়েটিকে পুলিশ হেফাজতে না দিলে জিনের বাদশা পরিচয়ধারী প্রতারক চক্র তাকে হত্যা করার সম্ভাবনা ছিল।
শাজাহানপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নান্নু খান জানান, মেযেটিকে পুলিশ হেফাজতে রেখে তার জবানবন্দী নেয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে তার বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা থানায় আসেন। পরে তাদের জিম্মায় দেয়া হয়।