তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা মারপিট ও ভাংচুুরের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল কতৃপক্ষের দাবি, রোগীর মৃত্যুর পর তার স্বজন ও বহিরাগতরা কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স সহ অন্যদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর ও ভাংচুর করে। তবে এ ব্যাপারে পাল্টা অভিযোগও পাওয়া গেছে। রোগীর স্বজনরা জানান, প্রতিবাদ করলে কর্তৃপক্ষের লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান , গাইবান্ধা সদরের বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাটিকামারী গ্রামের আলতাফ হোসেনের স্ত্রী জাহেদা বেগম (৫৫) কে মুমুর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। কিন্তুু দুপুরে যথারীতি হাসপাতালের ল্যাব বন্ধ থাকায় তাদের বাইরে রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রক্ত পরীক্ষা করার পর বিকেলে তাকে আবার হাসপাতালে আনা হয়। পরবর্তীতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোগীর স্বজনদের দাবী, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসলে তিনি রিপোর্টে রক্ত স্বল্পতার কারণ দেখিয়ে রক্ত সংগ্রহের কথা বলেন। তারা রক্ত যোগার ও ক্রসম্যাচ করে এনে জানতে পারেন জাহেদা মারা গেছেন। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি না করায় চিকিৎসার অভাবে অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজন পাল জানান, রোগীর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকায় তার অবস্থা আগে থেকেই সংকটাপন্ন ছিল। সেই সময় ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষার জন্য বলা হয়। তারা ফেরার পর রোগীর মৃত্যুর কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে জরুরী বিভাগে হামলা চালিয়ে কর্তব্যরত নারী চিকিৎসকসহ দুই চিকিৎসক , শিক্ষানবিস নার্স এবং অন্য কর্মীদের বেধড়ক মারপিট করে। তারা জিনিসপত্রও ভাংচুর করে।
এদিকে এই ঘটনার পর প্রায় তিন ঘন্টা চিকিৎসা বন্ধ করে চিকিৎসকরা হামলাকারীদের শাস্তি দাবী করেন। তারা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবাদানকারী চিকিৎসকদের এই লাঞ্ছনা ও মারপিটের বিচার দাবি করেন।
রাত সাড়ে নয়টার দিকে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক ডা. তাহেরা আক্তার মনি বলেন, সাধারন মানুষের যাতে কোন কষ্ট না হয় সেজন্য জরুরী বিভাগ চালু রাখা হয়েছে। আগামীকাল সকালে চিকিৎসকরা সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি অপারেশন রজ্জব আলী বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্র্তীতে প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।