অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হলো, প্যারিস সেন্ট জার্মেইর (পিএসজি) সঙ্গে চুক্তি করলেন সার্জিও রামোস। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে রামোস নিজেই এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
স্প্যানিশ এই ডিফেন্ডারের সঙ্গে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চুক্তি হয়েছে পিএসজির।
রামোস তার পোস্টে একটি ছবি আপলোড করেন, যেখানে তিনি পিএসজির জার্সি ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। জার্সিতে লেখা ২০২৩। আর ক্যাপশনে লিখেছেন, স্বপ্ন দেখার সবচেয়ে ভালো জায়গা, জেতার জন্য সেরা ক্লাব আমরা সবকিছুর জন্য আমাদের যা কিছু আছে তা নিয়ে লড়াই করতে যাচ্ছি ।
এর আগে গত মাসে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্যারিয়ার শেষ করার ঘোষণা দেন রামোস। এই ক্লাবের হয়ে অসংখ্য লড়াই জিতেছেন, একঝাঁক রথী-মহারথীদের সামলে সামনে থেকে দিয়েছেন নেতৃত্ব, এনে দিয়েছেন অগুনতি সাফল্য, যেখানে খেলে নিজেকে নিয়ে গেছেন কিংবদন্তির পর্যায়ে।
রামোসের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে রিয়ালের একটা যুগের পরিসমাপ্তি ঘটলো। এখানে কাটানো ১৬ বছরে নিজেকে ধীরে ধীরে ক্লাবের ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তিনি। রিয়ালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম স্প্যানিশ খেলোয়াড় হিসেবে ২০০৫ সালে সেভিয়া থেকে ২৭ মিলিয়ন ইউরোর রামোসের আগমন ঘটে।
রিয়ালে আসার পর থেকে ক্লাবটির আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নেতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে রামোসের। এই সময়ে সেই গ্যালাকটিকো যুগ থেকে হোসে মরিনহোর অস্বাভাবিক সময়কাল এবং ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মাঝে ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অন্যতম সেনানী ছিলেন তিনি।
রামোসের কিংবদন্তির শুরুটা মূলত ২০১৪ সাল থেকে। ১২ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেবার নিজেদের ক্লাবের ইতিহাসের ১০ম ইউরোপিয়ান কাপ জেতার স্বাদ পায় লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। এরপর ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আসে আরও ৩টি ইউরোপা সেরার মুকুট।
রিয়ালের জার্সিতে ১০১ গোল এবং ২২টি শিরোপা জেতার অসাধারণ কীর্তির মালিক রামোস। ক্লাবের হয়ে তার এমন অবিশ্বাস্য ফর্মের প্রতিফলন ঘটেছে স্পেন জাতীয় দলেও। ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০০৮ ও ২০১২ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা স্প্যানিশ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।
রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার তালিকায় চারে অবস্থান রামোসের। তার ৬৭১ ম্যাচের বিপরীতে এগিয়ে আছেন যথাক্রমে রাউল গঞ্জালেস, ইকার ক্যাসিয়াস এবং মানোলো সানচিস। ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে গত মৌসুমটা বাজেভাবে কেটেছে তার। দলও ছিল শিরোপাশূন্য। এতেই দলের সাফল্যে তার প্রভাব বোঝা যায়। ফলে, বিদায় বলে দিলেও রিয়ালের ইতিহাস তাকে ‘ক্যাপ্টেন’ হিসেবেই মনে রাখবে।