সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট শিবের বাজার সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন অংশ ধ্বসে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার বাদাঘাট ব্রীজ হতে হাটখোলা ইউনিয়নের শিবের বাজার পর্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ এসড়কটি সম্প্রসারন ও মেরমতের জন্য দীর্ঘদিন যাবত দাবী করে আসছেন এলাকাবাসী। স্হানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড,এ কে আন্দুল মোমেন এর নির্দেশনায় ২৯শ ২৫ মিটার অর্থাৎ ২.৯২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ রাস্তাটি সম্প্রতি সম্প্রসারন ও রক্তনাবেক্ষণ করছে স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সিলেট সদর উপজেলা অফিস।একাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে নিয়োগ পেয়েছেন MHC ও MPT নামক দুটি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যায় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৫ লক্ষ টাকা,এ রাস্তাটির প্রস্থ আগে ছিলো ১২ ফুট,এখন তাহা বাড়িয়ে ১৮ ফুট করা হচ্ছে। প্রকল্প মেয়াদ চলতি বছর অর্থাৎ ২০২১ সনের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকলেও ইতোমধ্যে এ সড়কের প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে। বছরের প্রথম প্রায় চার মাস সময় পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্টান এ সড়কে কাজ না ধরে মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে অর্থাৎ বৃষ্টির মৌসুমে কাজ ধরেছেন বলে অভিযোগ স্হানীয় এলাকাবাসীর। অনুসন্ধানে জানা যায়,এ কাজ পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট দফতর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১ বছর সময় বেধে দিয়েছে। অথঃচ বর্তমান বৃষ্টির মৌসুমে তাড়াহুড়া করে মাত্র ২ মাসের ভেথরে উক্ত রাস্তার প্রায় কাজ সম্পন্ন করে দিয়েছেন তারা।এখন অল্প অর্থাৎ প্রায় মাত্র ১০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে বলে দাবী সংশ্লিষ্টদের। কাজটি শেষ করতে দিনের বদলে রাত্রেও কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি কাজ শেষ হতে না হতে ৪-৫ দিনের মাথায় বিভিন্ন স্হানে সড়কের মধ্যখান আবার কোন কোন স্হানে সড়কের দুইপাশে বড় ধরনের ধ্বসে রাস্তাটি অনেক জায়গায় এখন ঝুলিয়ে রয়েছে। নতুন নতুন জায়গায় আরো ধ্বসে যাওয়াও যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। সরজমিন গিয়ে দেখাযায় যে, দ্রত সময়ের মধ্য সড়কটির এমন বেহাল পরিস্হিতিতে জনমনে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।কাজে চরম তাড়াহুড়া করা,নিম্নমানে ইটের খোয়া,বালু ও বিঠুমিন ব্যাবহার এবং নতুন করে প্রসস্ত রাস্তাটির দু সাইডকে যথাযথ ভাবে মাটি ফেলে সাইড সংরক্ষণের যে নির্দেশনা ছিলো সেভাবে না করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো কাজ করেছে বলে অভিযোগ স্হানীয়দের। একাজে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্হানীয় ইউপি সদস্য তৈবুর রহমান বিরাই,তিনি এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ ও লিখেছেন,তিনি বলেন উত্তর সিলেটের প্রতিদিন হাজার মানুষর চলাচলের একমাত্র ওই রাস্তাটি,সেখানে এতো নীম্ন মানের কাজে আমরা এলাকাবাসী খুবই ক্ষোব্ধ এবং মর্মাহত হয়েছি। তিনি বলেন,এ কাজটির জন্য আমরা স্হানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বার বার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্মরণাপন্ন হয়েছি, তিনির জন্য এ রাস্তাটি আজ হতে যাচ্ছে। একাজটি যথাযথভাবে করতে সরকার পর্যাপ্ত টাকা ও সময় বরাদ্দ দিয়েছে,কাজের সাইডে থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করার জন্য এলজিইডি সিলেট সদর উপজেলার পলাশ হোসেন নামক একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে এর দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয়েছে। অথঃচ কাজে এমনিভাবে দুর্নীতি অনিয়ম হবে সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্হা গ্রহনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াতকারি শিবের বাজার কৃষি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় সরকার যেকোন উন্নয়ন কাজের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক,তবে অনিয় দুর্নীতি আমাদের কাঙ্খিত উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়।তিনি এ রাস্তার অনিয়ম কাজে হতাশ প্রকাশ করে বলেন,রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগে এভাবে ধ্বসে যাবে,ভেঙ্গে যাবে এটা কেমন কথা,নিশ্য়ই এ কাজে যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। স্হানীয় সিএনজি অটোরিকশা চালক সিরাই মিয়া বলেন,এতদিন আমরা অনেক কষ্টকরে যাত্রীদের নিয়ে গাড়ি চালিয়েছি,আশা ছিলো রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন হলে হয়তো আমাদের গাড়ি নিয়ে চলাচলের কষ্টটা লাঘব হবে,আমাদের কিছুটা সুখ হবে,কিন্তু এখন দেখি তার উল্টোটা। তিনি এ বিষয়ে স্হানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন। এ বিষয়ে রাস্তার তত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠান এলজিইডি সিলেট সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল আজম বলেন,বিষয়টি জেনে তিনি সরেজমিন গিয়ে দেখেছেন,এ রাস্তার কাজ আরও বাকি রয়েছে,ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এখনো এ রাস্তার কাজের কোন বিল দেওয়া হয়নি,রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়া এবং কিছু জায়গায় সাইড ধ্বসে যাওয়ার বিষয়টি তারা গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছেন।