কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার) : হাসপাতালে পরিচয়ের পরে দুজনের মধ্যে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান। তারপর দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক। পারিবারিক দ্বন্ধের কারণে প্রেমিকার পরিবারের অসম্মতি। প্রেমের সম্পর্কে টানা পোড়ন শেষে পারিবারিকভাবে বিয়ের আলোচনা। পরে যৌতুক চাওয়ায় প্রেমিক মাহাবুবের (৩০) বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের প্রেমিকার (২০)।
বুধবার (৩০ জুন) এ রকম এক অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার ওসি মো. শাহনুর-এ আলম নিশ্চিত করেছেন।
প্রেমিক মো. মাহাবুব উপজেলার বিলাশপুর গ্রামের আবুল মকবুল হোসেনের ছেলে। লেখাপড়া তার সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। অন্যদিকে প্রেমিকা একই উপজেলার পাশর্^বর্তী গ্রাম চন্দ্রকোণার আবুল কাশেমের মেয়ে। সে কারিগরি শাখার দশম শ্রেণির ছাত্রী।
অভিযোগে উল্লেখ, প্রেমিকার ভাই তিন মাস আগে প্রেমিক মাহাবুবের প্রতিবেশি মেয়ের সাথে প্রেম ঘটিত সম্পর্কের কারণে বিষপানে আত্মহত্যা করেন। এতে ওই গ্রামে বিয়ে দিতে প্রেমিকার পরিবারের অসম্মতিতে প্রেমিক যুগলের দুই বছরের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। প্রেমিক প্রেমিকাকে না পেলে আত্মহত্যা করবে। ভয় পেয়ে প্রেমিকার অনুরোধে পরিবারের লোকজন গত ১১ জুন বিয়ের আলোচনার জন্য মাহাবুবের বাড়িতে যান। কাবিন ও গহনা নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে আলোচনা হয়। যৌতুকের জন্য এক লক্ষ টাকা দাবী ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে।
এ নিয়ে প্রেমিকাকে জিজ্ঞেস করা হলে সে বলেন, ‘আত্মহত্যা করবে ভয়ে পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করে ওদের বাড়িতে পাঠিয়েছি। আমাদের দুই বছরের প্রেমে যৌতুকের জন্য এক লক্ষ টাকা দাবী করে। তারা আমাকে চাই না, চাই যৌতুক। অভিভাবকদের পছন্দ অনুযায়ী বিয়েতে এখন আমার আপত্তি নেই।’
প্রেমিক মাহাবুবের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘বিয়ের কথা-বার্তার জন্য ১৫-১৬ জন এসেছিলেন। আমারও তাদেরকে আপ্যায়ন করেছি। কাবিনের জন্য তাদের দাবী তিন লক্ষ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণলাঙ্কার। সব ঠিক রেখে কাবিন দেড় লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয় দু’পক্ষের আলোচনায়। পরের দিন গহনার মাপের জন্য ফোন করা হলে তাদের পরিবারের লোকজন এ বাবদ এক লক্ষ দিতে হবে। তারা পছন্দ অনুযায়ী গহনা কিনে নিবেন। এটা কি কোন ছেলের অভিভাবক মেনে নিবে বলেন? অনেক দিন ধরে প্রেম করেছি। তাকে হারানোর ভয়ে আত্মহত্যার কথা মুখে চলে আসতে পারে। ওই পক্ষের লোকের কাছ থেকে শুনতে পেরেছি কয়েক দিন আগে তাকে নাকি বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। ওর মোবাইল বন্ধ, যোগাযোগ করতে পারছি না।’
দুর্গাপুর থানার ওসি মো. শাহনুর-এ আলম জানান, গত মঙ্গলবার রাতে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সে অনুযায়ী আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।