নির্বাচনে হেরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ক্ষমতা থেকে দূরে সরে গেলেও আলোচনা-সমালোচনা তাকে কখনোই ছুটি দেয় না। ক্ষমতায় থাকাকালে নানা কৃতকর্মের জন্য আজও সমালোচিত তিনি। আজও তিনি হরহামেশাই হয়ে যান সংবাদের শিরোনাম।
এমনই একটি ঘটনা আবারও প্রকাশ্যে এল ট্রাম্পকে নিয়ে। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন- জীবাণুনাশককে যেন করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। তার ওই মন্তব্যে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। এমনকি এজন্য তিনি সর্বস্তরে হাসির পাত্র হয়ে গিয়েছিলেন। আবার সামনে এল সেই বিষয়টি।
সম্প্রতি ভুয়া পাদ্রি মার্ক গ্রেনন দাবি করেছেন- সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেওয়া করোনার ‘অলৌকিক ওষুধ’ খেয়েছেন।
স্বঘোষিত এই ‘আর্চবিশপ’ বা পাদ্রি করোনার ওষুধ হিসেবে জীবাণুনাশক বিক্রি করতেন।
তার দাবি, এই উপদেশ দেওয়ার কিছুদিন আগেই তিনি ট্রাম্পকে জীবাণুনাশক ব্লিচ পাঠিয়েছিলেন।
জেলে বসে দেওয়া ৯০ মিনিটের সাক্ষাৎকারে মার্ক গ্রেনন দাবি করেন, তার জীবাণুনাশক পান করেই ট্রাম্প ওই ঘোষণা দিতে উৎসাহী হয়েছিলেন। গ্রেনন বলেন, এক পরিচিতের মাধ্যমে ট্রাম্পের পরিবারের কাছে ব্লিচের বোতল পাঠিয়েছিলেন তিনি। ‘আমি জীবাণুনাশকটি পেয়েছি’—এই বলে ট্রাম্প নাকি ‘প্রাপ্তিস্বীকার’ও করেছিলেন টেলিভিশনে।
এর আগে গ্রেনন বলেছিলেন, সে সময় তিনি চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিলেন ট্রাম্প যেন ক্লোরিন ডাইঅক্সাইডের রোগ নিরাময়ের গুণাগুণ নিয়ে প্রচারণা চালান।
কিন্তু নতুন এই সাক্ষাৎকারে গ্রেনন আত্মবিশ্বাসের সাথে দাবি করেছেন, ব্লিচের বোতল ট্রাম্পের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এবং ট্রাম্প এই তরল পানও করেন।
২০২০ সালের ২৩ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প উপদেশ দিয়েছিলেন জীবাণুনাশককে করোনার চিকিৎসায় ব্যবহারের কথা বলেন।
সেই সংবাদ সম্মেলনে কোভিডের ওষুধ হিসেবে জীবাণুনাশকের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘এটি এক মিনিটে করোনাকে ধ্বংস করে দেয়। মাত্র এক মিনিটে।’
এরপর তিনি ইনজেকশন বা অন্য কোনও উপায়ে মানুষের ওপর এই জীবাণুনাশক প্রয়োগ করা যায় কি না তা ভেবে দেখার পরামর্শ দেন বিজ্ঞানীদের।
ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের অফিসে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয়েছিল তিনি আসলেই গ্রেননের মিরাকল মিনারেল সলিউশন (এমএমএস) পান করেছিলেন কিনা। কিন্তু ট্রাম্পের পক্ষ থেকে কোনও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
গ্রেননের দাবি, লন্ডনভিত্তিক জ্যোতিষী ও আধ্যাত্মিক জাকারিয়া আদিলের মাধ্যমে ট্রাম্পের কাছে তরল ব্লিচ পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি।
গ্রেনন ও তার ছেলে জোসেফ বর্তমানে কলম্বিয়ার জেলে আছেন। এপ্রিলে মিয়ামির এক জুরি বোর্ড গ্রেনন এবং তার অন্য দুই ছেলে, জনাথন ও জর্ডানকে দোষী সাব্যস্ত করে। জনাথন ও জর্ডান এখন মিয়ামিও জেলে বন্দি।
গ্রেনন পরিবারে চার সদস্যের বিরুদ্ধে কোভিড, ক্যান্সার, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য গুরুতর রোগ নিরাময়ের ওষুধ হিসেবে প্রতারণামূলকভাবে জীবাণুনাশক বিপণন ও বিক্রির অভিযোগ আনা হয়েছে। এই বছরের শেষ দিকে মিয়ামিতে তাদেরকে ফৌজদারি বিচারের মুখোমুখি করার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান