- কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার) : “সংস্কৃতি ধারণ, লালন ও চর্চার মাধ্যমেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহমান থাকে। এ বিষয়টির প্রতি লক্ষ রেখেই বর্তমান সংস্কৃতিবান্ধব সরকার জাতীয় সংস্কৃতির পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, পরিচর্যা, বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বর্তমানে ৭টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে আরো তিনটি নতুন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, নওগাঁ ও দিনাজপুরে নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। যেগুলোর জনবল কাঠামো সৃষ্টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভার্চুয়ালে সংযুক্ত হয়ে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় বিরিশির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল একাডেমিতে দুদিনব্যাপীর গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব-২০২১ এর প্রধান অতিথির বক্তব্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে.এম. খালিদ এমপি এসব কথ বলেছেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওয়ানগালা গারো সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় ও কৃষি উৎসব। এটি মূলতঃ দেব-দেবীদের উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উৎসব। গারোরা প্রকৃতি পূজারী হলেও সাম্প্রতিককালে জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। যে কারণে ওয়ানগালা উৎসব আগের মত জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে উদযাপিত হয় না। বছরব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা তৈরির নির্দেশনাসহ এ বিষয়ে একাডেমির পরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন জনমুখী কর্মসূচি গ্রহণের ফলে গারোসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ জীবনমানের অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী গারো সম্প্রদায়কে ওয়ানগালার শুভেচ্ছা জানান ও তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল একাডেমির নৃত্য প্রশিক্ষক ও সাংস্কৃতিকর্মী মালা মার্থা আরেং এর সঞ্চালনায় ভার্চুয়ালে এ আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও এ একাডেমির নির্বাহী পরিষদের সভাপতি কাজি মো. আবদুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিং-১ আসনের সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন ও নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী।
এ উৎসবের উদ্বোধন ঘোষনা করেন নেত্রকোনা-১ আসনের সাংসদ মানু মজুমদার। এছাড়াও স্বাগত বক্তব্য এ একাডেমির পরিচালক সুজন হাজং ও শুভেচ্ছা বক্তব্য উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান প্রদান করেন।
প্রধান আলোচক ছিলেন, কলাম লেখক ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং এবং প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি মিঠুন রাকসাম। আলোচনা শেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল একাডেমি এবং গারো সম্প্রদায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পরিবেশিত হয়।