ইউরো কাপের ইতিহাসে সফলতম দল স্পেন। এ টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ তিনবারের চ্যাম্পিয়ন তারা। ফলে প্রতি আসরেই তাদের ওপর থাকে বাড়তি প্রত্যাশা। ব্যতিক্রম নয় এবারও। কিন্তু আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে হতাশই করেছে লুইস এনরিকের শিষ্যরা, হারাতে পারেনি সুইডেনকে।
স্পেনের লা কার্তুজ স্টেডিয়ামে হওয়া ম্যাচটিতে একের পর এক সুযোগ তৈরি করেছে স্পেন। কম যায়নি সুইডেনও। কিন্তু দুই দলই ভুগেছে যথাযথ ফিনিশিংয়ের অভাবে। এক্ষেত্রে বড় কৃতিত্ব দিতে হবে সুইডেন গোলরক্ষক ওলসেনকে। তার দৃঢ়তার কারণেই মূলত গোলশূন্য ড্র হয়েছে ম্যাচটি।
নিজেদের ঘরের মাঠে খেলা ম্যাচটিতে সপ্তম মিনিটে প্রথমে বলার মতো সুযোগ তৈরি করে স্পেন। কিন্তু ডি-বক্সের দাগ ঘেঁষা জায়গা থেকে গোলবারের ওপর দিয়ে শট করেন দানি ওলমো। এর মিনিট দশেকের মধ্যে দুর্দান্ত এক হেড করেন ওলমো। কিন্তু এবার তাকে হতাশায় ডোবান সুইডেন গোলরক্ষক।
ম্যাচের প্রথমার্ধে সবচেয়ে বড় সুযোগটা পেয়েছিলেন স্পেনের স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা। নিজেদের অর্ধে বল হারিয়ে ফেলেছিলেন ড্যানিয়েলসন। তা ধরে এগিয়ে যান জর্দি আলবা। সুযোগ বুঝে বক্সে থাকা মোরাতার উদ্দেশে বলটি বাড়িয়ে দেন তিনি। শুধু গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারলেই হতো গোল। কিন্তু সেই বলটি বাইরে মারেন মোরাতা।
এর মিনিট তিনেক পর অপ্রত্যাশিত এক সুযোগই পেয়ে যায় সুইডেন। ফাঁকায় বল পান সুইডিশ ফরোয়ার্ড আইজ্যাক। স্পেনের ডিফেন্ডার লাপোর্তাকে কাটিয়ে দূরহ কোণ থেকে গোলের জন্য শট নেন তিনি। সেটি ফেরান লরেন্তে। তবে বিপদমুক্ত হয়নি। উল্টো আঘাত হানে পোস্টে, ফিরতি বল গ্লাভসে নেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সাইমন।
গোলের সুযোগ তৈরি করেও হতাশার গল্প লেখার ধারাবাহিকতা চলতে থাকে দ্বিতীয়ার্ধেও। বিশেষ করে ম্যাচের ৬০ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত এক সুযোগ পেয়েছিল সুইডেন। ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন মার্কাস বার্গ। আইজ্যাকের বাড়ানো বলে কেবল পা ছোঁয়ালেই পেতেন গোল। কিন্তু সেটিও পারেননি তিনি।
একের পর এক গোল মিসের মহড়ায় অধৈর্য হয়ে পড়ে স্পেন, বাড়িয়ে দেয় আক্রমণের মাত্রা। দলের খেলায় পরিবর্তন আনতে একের পর খেলোয়াড় বদল করতে থাকেন স্পেনের কোচ লুইস এনরিক। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। শুধু নতুন সুযোগ তৈরি আর তা মিসের গল্পই লেখা হয়েছে বারবার।
একদম শেষ দিকে গিয়েও জয়সূচক গোলটি পেতে পারত স্পেন। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার ঠিক আগে ডি-বক্সে ক্রস বাড়িয়ে দিয়েছিলেন পাওলো সারাভিয়া। জায়গায় থাকা জেরার্ড মরেনো হেডও করেন দুর্দান্ত। কিন্তু আবারও দেয়াল হয়ে দাঁড়ান ওলসেন। এবার পা দিয়ে স্পেনকে গোল বঞ্চিত রাখেন তিনি।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে বেশ কিছু কারণে খানিক সময় নষ্ট হওয়ায় ৬ মিনিট দেয়া হয় অতিরিক্ত। এ ছয় মিনিটে রীতিমতো ঝড়ের বেগে সুইডেনের রক্ষণে হানা দিয়েছে স্পেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে গিয়েই যেন সব তালগোল পাকিয়ে ফেলে তারা। ফলে সুযোগ মিসের হতাশায় ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
ই গ্রুপে দিনের প্রথম ম্যাচে আত্মঘাতী গোলের সুবাদে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে স্লোভাকিয়া। আর দ্বিতীয় ম্যাচটি ড্র হওয়ায় স্লোভাকিয়াই রইল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। আর সবার নিচে পোল্যান্ড। মাঝের দুই স্থানে সুইডেন ও স্পেন।