ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো আর লিওনার্দো পারেদেসের গোলে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের মাত্র ৮ মিনিটের ভেতরেই ২-০ গোলের লিড নেয় আর্জেন্টিনা। তবে ম্যাচের ৫১তম মিনিটে লুইস মুরিল আর শেষ মুহূর্তে মিগুইল বোরহার গোলে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় মেসিদের।
মূল্যবান একটি পয়েন্ট তুলে নিয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে কলম্বিয়া।
কলম্বিয়ার এস্তাদিও মেট্রোপলিটানোতে বাংলাদেশ সময় বুধবার (০৯ জুন) সকালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো ও লিওনার্দো পারেদেসের গোলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান কমান লুইস মুরিয়েল। আর শেষ দিকে সমতা টানেন বোরহা।
মূল্যবান দুটি পয়েন্ট হারানোর ম্যাচে বড় ধাক্কাও খেয়েছে আর্জেন্টিনা। চোট পেয়েছেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তার আঘাতটা বেশ গুরুতর বলেই ধারণা করা হচ্ছে। প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কো আরমানি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। কোপা আমেরিকা শুরুর মাত্র কদিন আগে যা দলটির জন্য হতে পারে বড় দুর্ভাবনার।
আগের ম্যাচে চিলির বিপক্ষে অনেক সুযোগ পেয়েও জয়সূচক গোলের দেখা না মেলায় দুর্ভাবনা ভর করেছিল স্কালোনির মনে। স্কোরিংয়ের সমস্যায় আবারও ভুগতে হয় কি না? প্রথম আট মিনিটেই দুবার জালে বল পাঠিয়ে কোচের দুঃশ্চিন্তার প্রায় ইতি টেনে দেন রোমেরো ও পারেদেস।
প্রথম সাফল্য মেলে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে। ডান দিক থেকে রদ্রিগো দে পলের দারুণ ফ্রি কিকে লাফিয়ে হেডে দলকে এগিয়ে নেন রোমেরো। পাঁচ মিনিট পর প্রতিপক্ষের ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পারেদেস। ডি-বক্সে মেসি শট নিতে ব্যর্থ হওয়ার পরও বিপদমুক্ত করতে পারেনি কেউ। বল বুক দিয়ে নামানোর ফাঁকে প্রতিপক্ষের দুই জনের মাঝ দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন পারেদেস। এরপর লাউতারো মার্টিনেজের বাড়ানো ফিরতি পাস ধরে আরেকজনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন পিএসজি মিডফিল্ডার।
২৭তম মিনিটে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হাতে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। জিওভানি লো সেলসোর থ্রু বল ধরে ডি-বক্সে ডান দিক থেকে জোরালো শট নেন মার্টিনেজ। লাফিয়ে বল ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি গোলরক্ষক ডেভিড অসপিনা। ফাঁকায় পেয়ে যান নিকো গনসালেস, তবে তার শট পোস্ট ঘেঁষে পাশের জালে লাগে।
প্রথমার্ধেই মূল গোলরক্ষককে হারানোর ধাক্কাটা খায় আর্জেন্টিনা। ৩৪তম মিনিটে বল ধরতে গিয়ে প্রতিপক্ষের ইয়েরি মিনার সঙ্গে ধাক্কা লেগে বেকায়দায় পড়ে মাথায় ও কাঁধে আঘাত পান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পাঁচ মিনিটেরও বেশি সময় মাঠেই তার চিকিৎসা চলে, পরে স্ট্রেচারে করে তাকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে লুইস মুরিয়েলের সফল স্পট কিকে লড়াইয়ে ফেরে কলম্বিয়া। ডি-বক্সে মাতেউস উরিবের মুখে নিকোলাস ওটামেন্ডি আঘাত করলে পেনাল্টি বাঁশি বাজান রেফারি। হলুদ কার্ডও দেখেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার।
৫৮তম মিনিটে গোল পেতে পারতেন মেসি। তবে তার দারুণ ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান অসপিনা। বল তার হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে বাইরে যায়। ৭২তম মিনিটে ডি-বক্সে জায়গা বানিয়েও উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন মুরিয়েল। ৮৫তম মিনিটে আবারও মেসিকে গোল বঞ্চিত করেন অসপিনা। ডি-বক্সের মধ্যে থেকে বার্সেলোনা তারকার শট ঝাঁপিয়ে ফেরান নাপোলি গোলরক্ষক।
পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে আসে আর্জেন্টিনাকে হতভম্ব করে দেওয়া গোলটি। ডান দিক থেকে হুয়ান কুয়াদরাদোর ক্রসে হেডে গোলটি করেন বোরহা। বদলি গোলরক্ষক আগুস্তিন মার্চেসিন ঝাঁপিয়ে বল হাত লাগালেও গোললাইন পেরিয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি। আর তাতেই জেতা ম্যাচ হাত ফসকে বেরিয়ে যায় আর্জেন্টিনার।
লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ছয় ম্যাচ শেষে সমান তিন জয় এবং ড্র’তে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে অবস্থান করছে আর্জেন্টিনা। আর যথারীতি সবকটি ম্যাচ জিতে শীর্ষে ব্রাজিল। অন্যদিকে ছয় ম্যাচে দুটি করে জয় ড্র এবং হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে কলম্বিয়া।