জাতীয় দলে ফেরার ম্যাচে উজ্জ্বল ছিলেন দলের সেরা তারকা নেইমার। গোল করলেন ও করালেন।
নেইমারের নৈপুণ্যে ইকুয়েডরের বাধা টপকে গেল ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ধরে রাখল শতভাগ জয়ের ধারা।
শনিবার (০৫ জুন) পোর্তো আলেগ্রের স্তাদিও বেইরা-রিওতে ২-০ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। পাঁচ ম্যাচে পঞ্চম জয়ে দৃঢ় করেছে শীর্ষস্থান। রিচার্লিসন দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর সফল স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার। ব্রাজিলের প্রথম গোলের উৎস ছিলেন এই পিএসজি তারকাই।
এদিন পুরো ম্যাচে একবারের জন্যও ব্রাজিলের রক্ষণে ভয় জাগাতে পারেনি ইকুয়েডর। অন্যদিকে বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছে স্বাগতিকরা।
ইনজুরির কারণে ক্লাব ফুটবলে প্রায়ই মাঠের বাইরে থাকতে হয় ব্রাজিলের সুপারস্টার নেইমার জুনিয়রকে। তবে তার সামর্থ্য ও প্রতিভা নিয়ে সংশয় নেই কারও। বিশেষ করে জাতীয় দলের জার্সিতে রীতিমতো দুর্বার এ ফরোয়ার্ড। যার প্রমাণ মিলল আরও একবার। ক্লাব ফুটবলের ব্যস্ততা শেষ করে জাতীয় দলে ফিরতেই জাদুকরী পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন নেইমার। ব্রাজিলের জয়ে একটি গোল করেছেন তিনি, অন্যটি করিয়েছেন রিচার্লিসনকে দিয়ে। যেখানে বড় অবদান ছিল নেইমারেরই।
স্কোয়াডে গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রবার্তো ফিরমিনো বা ভিনিসিয়াস জুনিয়ররা থাকলেও, মূল একাদশে গ্যাব্রিয়েল বারবোসাকে স্ট্রাইকার হিসেবে সুযোগ দেন ব্রাজিল কোচ তিতে। যার সুফলও প্রায় পেয়ে গিয়েছিলেন ম্যাচের ৪১তম মিনিটে। ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষদিকে গিয়ে বল জালে জড়িয়েছিলেন গ্যাব্রিয়েল বারবোসা। কিন্তু তিনি তখন অফসাইডে থাকায় পতাকা উড়িয়ে সেই গোল বাতিল করে দেন লাইনসম্যান। ফলে গোলশূন্য অবস্থাতেই শেষ প্রধমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে গোলের জন্য আরও ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় সেলেকাওদের। ম্যাচের ৬৫ মিনিটের মাথায় দলকে প্রথম লিড এনে দেন রিচার্লিসন। ডি-বক্সের বাম পাশ থেকে শটটি নিতে পারতেন নেইমার নিজেই। তবে তা না করে, তিনি বল এগিয়ে দেন এবং সহজেই তা গোলে পরিণত করেন রিচার্লিসন।
এই এক গোলেই জয়ের পথে এগুচ্ছিল ব্রাজিল। একদম শেষ দিকে গিয়ে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে মাঠে নেমে ১০ মিনিটের মধ্যেই দলকে পেনাল্টি এনে দেন ফিরমিনো। লম্বা সময় ধরে ভিডিও এসিসট্যান্ট রেফারির সহায়তা নিয়ে পেনাল্টির বাঁশি বাজান ম্যাচের মূল রেফারি।
সেই পেনাল্টি নিয়েও হয়ে যায় এক পশলা নাটক। নেইমারের নেয়া প্রথম পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক অ্যালেক্সান্ডার ডমিঙ্গেজ। কিন্তু সেই শট নেয়ার আগেই তিনি গোল লাইন থেকে বেরিয়ে আসায় পুনরায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এই সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়ান ইকুয়েডর গোলরক্ষক এবং দেখেন হলুদ কার্ড। তবে বদলায়নি সিদ্ধান্ত এবং দ্বিতীয়বার সুযোগ পান নেইমার। এবার আর ভুল করেননি তিনি। গোলরক্ষককে ডানে পাঠিয়ে বাম দিকে আলতো শটে গোল করেন তিনি।
ব্রাজিলের জার্সিতে নেইমারের এটি ৬৫তম গোল। দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলরক্ষক পেলের (৭৭) চেয়ে আর মাত্র ১২টি গোল দূরে রয়েছেন এ সেনসেশন।
নেইমারের এমন জাদুকরী পারফরম্যান্সে দিন পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের শীর্ষস্থান সুসংহত করল ব্রাজিল। বাছাইয়ের পাঁচ ম্যাচে পূর্ণ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে তারা। সমান ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আর্জেন্টিনা। পাঁচ ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট পাওয়া ইকুয়েডরের অবস্থান তৃতীয়।