যমুনা নদী পথে যোগাগের ক্ষেত্রে আবারো স্বপ্ন দেখছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বগুড়া ময়মনসিংহ হয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে দূরত্ব কমাতে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সঙ্গে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জের সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপনে ফেরি চালুর প্রক্রিয়া অবশেষে শুরু হওয়ায় স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে মানুষ।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীতে ফেরীঘাট স্থাপন হলে উত্তরের মানুষের সাথে আবারো বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার যোগাযোগ স্থাপন হবে। বগুড়া থেকে ঢাকার সাথে এই পথে চলাচলে প্রায় ৮০ কিলোমিটার পথ কমে যাবে। পথ কমে যাওয়ার পাশাপাশি নতুন করে প্রসার হবে কৃষি পণ্যের দ্রুত সরবরাহ, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার এবং সড়ক মহাসড়কে যানজট কমে আসবে। ফেরি ঘাট স্থাপনের দ্রুত বাস্তবায়ন চেয়েছে যমুনা নদীর দুই পাড়ের মানুষ।
জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও জামালপুরের মাদারগঞ্জ নৌপথে ফেরি চালুর জন্য ফেরিঘাট নির্মাণ, সড়ক যোগাযোগ স্থাপন, নাব্যতা ফেরাতে নদী খননসহ নদী সংস্কার ও উন্নয়নকাজে প্রকল্প গ্রহণের প্রাক-সম্ভ্যবতা যাচাইয়ে একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল ২৬ মে সারিয়াকান্দি ও মাদারগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করেছে। জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডব্লিউএম) দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল ফেরি চালুর সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করছেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন আইডব্লিউএমের পরামর্শক মো. মহিউদ্দীন পাটোয়ারি।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগে দূরত্ব কমাতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ হয়ে যমুনা নদীতে ফেরি সার্ভিস চালুর দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা চলছে। প্রথমে বাহাদুরাবাদ-গাইবান্ধার বালাসি নৌপথে ফেরি চালুর পরিকল্পনা ছিল সরকারের। পরে সেই পরিকল্পনা আর এগোয়নি। এখন নতুন করে মাদারগঞ্জ-সারিয়াকান্দি ১৬ কিলোমিটার নৌপথে ফেরি চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আইডব্লিউএমের পরামর্শক মো. মহিউদ্দীন পাটোয়ারি জানান, ‘দুই দিন ধরে নদীর দুই পাড়ের মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছি কোন স্থানে ফেরিঘাট হলে নদীর নাব্যতা সারা বছর ঠিক থাকবে, যোগাযোগব্যবস্থা ও ঘাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং পণ্য পরিবহন সহজলভ্য হবে। সাধারণ মানুষের মতামতসহ কারিগরি নানা দিক বিবেচনা করে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন এখান থেকে ফিরে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেবেন।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন, এই পথে ফেরি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের মানুষ বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাড়াও রাজধানী ঢাকায় বাসে কম সময়ে যাতায়াত করতে পারবেন। পাশাপাশি যমুনা সেতুর ওপর চাপ কমবে। ফেরি চালু হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছে যে, সারিয়াকান্দি থেকে মাদারগঞ্জ পর্যন্ত ফেরি চালু করার জন্য। এই এলাকার সাবেক মরহুম সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানও ফেরি সার্ভিস চালুর চেষ্টা করে গেছেন।